Ajker Patrika

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে বড় অসংগতি, উদ্বেগে শিক্ষার্থীরা

ঢাবি সংবাদদাতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় একই সেটের প্রশ্নপত্রে ধারাক্রমে অসংগতি দেখা গেছে। একই সঙ্গে কিছু প্রশ্নপত্রে চারটি প্রশ্ন পুনরাবৃত্তি হয়েছে। বিষয়টি পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করেছে।

এ ধরনের অসংগতির কারণে ওএমআর রিডারের মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘এ’ ও ‘বি’ সেটের দ্বিতীয় পাতার ১২টি প্রশ্নের বিন্যাসে অসামঞ্জস্য রয়েছে। সাধারণত পৃথক সেটের প্রশ্নে এমন ভিন্নতা বা এলোমেলো থাকে। তবে একই সেটে প্রশ্নক্রমের বৈসাদৃশ্য থাকতে পারে না।

এ ছাড়া, ‘এ’ সেটে অ্যাকাউন্টিং অংশের ২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর প্রশ্ন যথাক্রমে ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নম্বরে পুনরায় ছাপা হয়েছে। একই সমস্যা ‘বি’ সেটেও দেখা গেছে, যেখানে কিছু প্রশ্ন একাধিকবার এসেছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর অংশটি স্ক্যান করে কম্পিউটারের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়। কম্পিউটারকে একটি সেটের জন্য একটি উত্তরপত্র দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ভুল-শুদ্ধ নির্ণয় করে কম্পিউটার নম্বর প্রদান করে। তবে এক সেটের প্রশ্নে এমসিকিউর ক্রমধারা ঠিক না থাকলে যেসব শিক্ষার্থীর হাতে অসংগতিপূর্ণ প্রশ্ন গেছে, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এ ছাড়া কিছু প্রশ্নপত্রে প্রশ্ন পুনরাবৃত্তিও হতে দেখা যায়। ‘এ’ সেটে অ্যাকাউন্টিং অংশে ২৫ নম্বরে প্রশ্ন এসেছে, ‘তাসনু ট্রেডার্স ভুলক্রমে ৮০,০০০ টাকার অনুপার্জিত সেবা আয়ের অর্জনের সমন্বয় সাধন করেনি। আর্থিক বিবরণীতে এর ফলাফল কী হবে?’। একই প্রশ্ন ৩৩ নম্বরে পুনরায় ছাপা হয়েছে।

সেটের ২৬ নম্বরে ‘মাহরিন ও মেহনাজ একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের দুজন অংশীদার। তাদের মুনাফা বণ্টন অনুপাত ৫:২। তারা স্নেহাকে ১/৪ অংশ মুনাফা বণ্টনের চুক্তিতে ব্যবসায়ে নতুন অংশীদার হিসাবে গ্রহণ করে। তাদের মুনাফার নতুন অনুপাত কত?’ প্রশ্নটি এসেছে। একই প্রশ্ন ৩৪ নম্বরে পুনরায় ছাপা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

সেটের ২৭ নম্বর প্রশ্নে এসেছে ‘কোনটি বিলম্বিত মুনাফা জাতীয় খরচ?’। এই প্রশ্নটি ৩৫ নম্বরে পুনরায় ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া ২৮ নম্বরে ‘নিট বিক্রয় ও মোট মুনাফার পরিমাণ যথাক্রমে ৩০,০০০ টাকা এবং ৬,০০০ টাকা হলে ক্রয় মূল্যের উপর মুনাফার হার কত?’ প্রশ্ন এসেছে। এটি ৩৬ নম্বর প্রশ্নে পুনরাবৃত্তি হয়েছে।

একই সমস্যা ‘বি’ সেটের প্রশ্নেও হয়েছে। এই সেটের মধ্যেই একই প্রশ্নগুলো ২৯ নম্বর ৩৩ নম্বরে, ৩০ নম্বরের প্রশ্নটি ৩৪ নম্বরে, ২৮ নম্বরের প্রশ্নটি ৩২ নম্বরে এবং ৩১ নম্বরের প্রশ্ন ৩৫ নম্বরে পুনরাবৃত্তি হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী ও অনুষদের ডিন ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘এ সমস্যা খুবই সীমিতসংখ্যক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে হয়েছে এবং এ ধরনের সমস্যা যেসব কক্ষে হয়েছে সেগুলো শনাক্ত করে রেখেছি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো বৈষম্য করা হবে না। শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না এবং সমাধানের জন্য এরই মধ্যে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’

ডিন ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘ক্রমধারার বিষয়ে আপনারা যা বলছেন, সেটি একটি হিউম্যান এরর (মানবিক ভুল)। “এ” সেটের দুই নম্বর পৃষ্ঠা “বি” সেটে ছাপা হয়েছে, আবার “বি” সেটেরটা “এ” সেটে ছাপা হয়েছে। তবে সেটা সামান্য কয়েকটা প্রশ্নে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বড় অসংগতি দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম আরও বলেন, ‘যেহেতু “এ” সেটের মধ্যে “বি” সেটের প্রশ্নের পৃষ্ঠা এসে গেছে, তাই চারটা প্রশ্ন রিপিট দেখা গিয়েছে এবং ক্রমধারায় সমস্যা হয়েছে। এটা “এ” এবং “বি” দুই সেটেই হয়েছে। অল্প কিছু সংখ্যক প্রশ্নে। এটি আইডেন্টিফায়েবল। আমরা এটিকে শনাক্ত করে ফেলছি। তারপর আমরা এর সমাধান করে ফেলছি। যদিও এটি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সবগুলো চিহ্নিত করা যাবে।’

সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এটা কীভাবে বের করব (যেই অংশের কাছে ভুল প্রশ্ন গেছে), সেই পার্টটা তো আমরা পেয়েই গেছি। আমরা ইতোমধ্যে যেসব অভিযোগ পেয়েছি, কোন হলে, কোন কেন্দ্রে, সেই হলগুলোতে আলাদা রিড করাচ্ছি, সেই প্যাটার্ন দিয়ে নিচ্ছি। ওই প্যাটার্ন দিয়ে আমরা বের করে ফেলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত