Ajker Patrika

মাথার ওপরের ছাদ ধসে পড়ছে, ঝুঁকিতে চলছে ৮ দপ্তরের কার্যক্রম

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যুব উন্নয়ন দপ্তরে খসে পড়া পলেস্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যুব উন্নয়ন দপ্তরে খসে পড়া পলেস্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি আট দপ্তরের কার্যক্রম চলছে একটি তিনতলা পুরোনো ভবনে। কিন্তু ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ছাদের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোটবড় পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে গেছে। দেয়াল ও বিম ফেটে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই আতঙ্ক নিয়েই অফিস করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ, মৎস্য, সমাজসেবা, মহিলাবিষয়ক, যুব উন্নয়ন, সমবায়, মাধ্যমিক শিক্ষা ও খাদ্যনিয়ন্ত্রণ—এই আটটি দপ্তরের কার্যক্রম চলছে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত ওই তিনতলা ভবনটিতে। বিকল্প কোনো ভবন না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই সরকারি সেবা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার বিকেলে ভবনের দ্বিতীয় তলায় যুব উন্নয়ন দপ্তরের একটি কক্ষে হঠাৎ ছাদের পলেস্তারা খসে সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাহানারা খাতুনের টেবিলের ওপর পড়ে। এতে টেবিলসহ কিছু আসবাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া পলেস্তারার কিছু অংশ ছিটকে অফিস সহকারী তমিজুর রহমানের হাতে পড়ে। এ সময় তিনি আতঙ্কে দৌড়ে অফিস থেকে নিচে নেমে আসেন। পাশাপাশি ভবনের অন্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিচে নেমে যান। এর দুই দিন আগে তৃতীয় তলায় ছাদের পলেস্তারা খসে সিঁড়ির ওপর পড়ে।

এসব ঘটনায় আট দপ্তরের ৪৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাঁরা ও অসংখ্য সেবাপ্রার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই ভবনে অবস্থান করছেন।

হাতে খসে পড়ে পলেস্তারার আঘাত লাগা অফিস সহকারী তমিজুর বলেন, ‘ওই দিন হঠাৎ করেই আমাদের অফিসের ছাদের পলেস্তারার একটি বড় অংশ খসে পড়ে। এর কিছু অংশ আমার হাতের ওপর পড়ে। অল্পর জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। পরে আমিসহ অন্য দপ্তরের স্যাররাও আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে যাই। কিন্তু এখন অফিসে এসে ছাদের দিকে তাকালেই ভয় হয়। কখন যে মাথার ওপর ছাদ ধসে পড়ে!’

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যুব উন্নয়ন দপ্তরে ফেটে যাওয়া ছাদ ও দেয়াল। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে যুব উন্নয়ন দপ্তরে ফেটে যাওয়া ছাদ ও দেয়াল। ছবি: আজকের পত্রিকা

সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাহানারা বলেন, ‘বিকেলে অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আমার টেবিলের ওপর ছাদের বড় পলেস্তারার অংশ খসে পড়ে। এখনো আমার মাথার ওপরের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল আছে। আতঙ্কে টেবিলে বসতে পারছি না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা কীভাবে অফিস করব? মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে শিগগির জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা উচিত।’

এই তিনতলা ভবনের পাশেই উপজেলা পরিষদের পরিত্যক্ত পুরোনো দোতলা ভবন রয়েছে। এর কিছু অংশ কেটে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই ভবনের এক তলার ছাদ ও বিম খসে পড়ছে। এটিও যেকোনো সময় ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সমাজসেবা দপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী মুনসের আলী বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই ওই ভবনের ছাদ ও বিমের বড় পলেস্তারা খসে পড়ে। অল্পের জন্য আমার ওপর পড়েনি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ বলেন, ‘আজকেই এখানে যোগদান করেছি। খুব দ্রুতই খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার আহামেদ বলেন, ‘ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। ওই ভবনে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের পক্ষ থেকে যাতে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করে, এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বুশেহর পারমাণবিক কেন্দ্রে আছেন রুশ বিশেষজ্ঞরা, ইসরায়েলকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইরানকে ঘিরে ফেলছে একের পর এক মার্কিন রণতরি ও যুদ্ধবিমান

এবার ৫ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা

এনসিপি নেতা তুষারের বিরুদ্ধে এবার যৌন হয়রানির অভিযোগ তুললেন নীলা ইস্রাফিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত