Ajker Patrika

‘কাঁচা বাদাম স্টক আউট, পেস্তা কাজু নিয়া যান’

অর্চি হক, ঢাকা
Thumbnail image

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলে ঈদের বাজারেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘কাঁচা বাদাম’। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূমের ফেরিওয়ালা ভুবন বাদ্যকরের ভাইরাল সেই গানের নাম দিয়ে বাংলাদেশে ঈদের বাজারে দেদারসে বিকোচ্ছে নারীদের থ্রিপিস। 

শনিবার রাজধানীর মৌচাক মার্কেট এলাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা বাদাম, পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম নামের থ্রিপিসের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা আসতেই এসব থ্রিপিসের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আবার অনেক ক্রেতাও দোকানে ঢুকে আগ্রহভরে দেখতে চাইছেন কাঁচা বাদাম থ্রিপিস!

এমনই এক ক্রেতার প্রশ্নের জবাবে মৌচাকের শাপলা গার্মেন্টসের বিক্রেতা মোহাম্মদ সুমন বলেন, ‘কাঁচা বাদাম স্টক আউট, কাজু পেস্তা নিয়া যান।’

এ প্রতিবেদককে সুমন জানান, কয়েক দিন আগেও কাঁচা বাদাম ছিল তাঁদের দোকানে। সবগুলোই বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে আবার তুলতে হবে। 

মৌচাকের আলহামদুলিল্লাহ ফেব্রিকসের বিক্রয়কর্মী জানান, দৈনিক পাঁচ-ছয়টা কাঁচা বাদাম বিক্রি হচ্ছে তাঁদের।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাঁচা বাদাম, পেস্তা বাদাম আর কাজু বাদাম সবগুলো প্রায় একই ধরনের থ্রিপিস। সবগুলোই দেশে তৈরি। কিন্তু ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে এগুলোকে ‘ভারত থেকে আসা মাল’ বলে চালানো হচ্ছে। কোনো দোকানে এগুলো বিক্রি হচ্ছে আটশো টাকায়। আবার কোথাও আঠারোশতে! 

কাঁচা বাদাম না পেয়ে আটশো টাকায় পেস্তা বাদাম কেনা শামসুন নাহার বলেন, ‘আমার হেল্পিং হ্যান্ডের (গৃহপরিচারিকা) জন্য নিলাম। কাঁচা বাদাম গানটা ওর খুব পছন্দ। জামাটাও নিশ্চয়ই পছন্দ হবে ওর।’

কাঁচা, কাজু আর পেস্তা বাদাম নিয়ে মৌচাক এলাকার বিক্রেতারা তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে ক্রেতা উপস্থিতি। শনিবার বিকেলে মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা একেবারেই কম। বিক্রেতারা জানান, দুবছর আগেও এই সময়ে মার্কেটে পা ফেলার জায়গা থাকত না। সে দিন আর নেই!

হজরত শাহজালাল থ্রিপিস হাউসের বিক্রয়কর্মী নূর আলম বলেন, ‘দুই বছর লোকসান গোনার পর এবার যা বেচাবিক্রি হচ্ছে, তাতে আমরা খুশি। কিন্তু দুবছর আগে যেই অবস্থাটা ছিল সেইটা এখনো পুরাপুরি ফিরা আসে নাই।’

মহামারির কারণে দুবছর পর মোটামুটি বেচাকেনা হলেও আগের মতো ক্রেতা আসছেন নাদ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব ঈদের বাজারে পড়েছে বলে ধারণা এই বিক্রেতার। তিনি বলেন, ‘কেনা দামেও কাপড় বেচতে কষ্ট হইতেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেশি থাকায় মনে হয় এমনটা হইতেছে।’

কয়েকজন ক্রেতাও একই কথা বললেন। রামপুরা থেকে ফরচুন শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে আসা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন জানান, ঈদে ভাগনে, ভাইপো, ছেলে, মেয়ে সবার জন্য কেনাকাটা করতেন তিনি। করোনার দুই বছর সবকিছু বন্ধ থাকায় এর ব্যত্যয় ঘটেছিল। আর এবার আর্থিক অসংগতির কারণে নিজের দুই ছেলেমেয়ে ছাড়া কারও জন্যই কিছু কেনা হয়নি।

এই এনজিও কর্মী বলেন, ‘বাসা ভাড়া, চাল, ডাল, তেল, সবজি সবকিছুর দামই তো বাড়ছে। শুধু কমছে আমার বেতন। তাই ঈদের কেনাকাটায় কাটছাঁট করা লাগতেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত