Ajker Patrika

পিবিআইয়ের এসআইকে ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা প্রতিবেদনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৩, ১৬: ২৯
পিবিআইয়ের এসআইকে ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা প্রতিবেদনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

গোপালগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক (এসআই) রূপকুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ উঠেছে। মামলা তদন্তের সময় বিবাদীরা ঘুষ না দেওয়ায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিয়ে সাক্ষী বানিয়ে নিজের ইচ্ছামতো জবানবন্দি লিখেছেন বলে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা। 

আজ রোববার সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন উপজেলার পাকুরতিয়া গ্রামের আজিজুল হক, আতিয়ার শেখ ও নুরনবী শেখ। 

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, প্রায় এক বছর আগে নাজিরপুর উপজেলার উত্তর ঝনঝনিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিন মোল্লা তাঁর টুঙ্গিপাড়ার বাঁশবাড়িয়া বাজারের দোকানের জন্য আমাদের তিন ভাইয়ের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ধার নেন। এর বিনিময়ে সিকিউরিটি বাবদ কৃষি ব্যাংকের তিনটি চেক জমা দেন। টাকা দুই মাসের কথা বলে নিলেও চার মাসেও ফেরত দেননি। পরে টাকার জন্য বেশি চাপ দিলে আমাদের তিন ভাইকে তাঁর স্বাক্ষরিত তিনটি চেক দেন। প্রায় এক মাস পরে আবারও টাকা চাইলে আমাদের নামে টুঙ্গিপাড়া আমলি আদালতে জোরপূর্বক তিনটি চেক ও স্টাম্প রাখার মামলা করেন। তখন আদালত থেকে তদন্তভার পান টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক কামরুল ইসলাম। 

তাঁরা বলেন, এসআই কামরুল ইসলাম তদন্ত করে পান, ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে তিন ভাইয়ের কাছে আলাদাভাবে তিনটি চেক জমা দিয়ে মোট ৩৫ লাখ টাকা ধার নেন বাদী নাসির। এ ছাড়া জোরপূর্বক চেক ও স্ট্যাম্প নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। 

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা আরও বলেন, বাদী নাসির সেই প্রতিবেদনে নারাজি দিলে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন পিবিআইয়ের এসআই রূপকুমার বিশ্বাস তদন্তের সময় ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চান। ঘুষ দিলে তদন্ত প্রতিবেদন বিবাদীদের পক্ষে দেবেন বলে জানান তিনি। কিন্তু বিবাদীরা ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তা নিতে চান না এসআই রুপকুমার বিশ্বাস। 

পরে বাদীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে এবং সরেজমিন তদন্তের প্রমাণ হিসেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেখানোর কথা বলে পাকুরতিয়া বাজারের কাঠমিস্ত্রি আজাদ শেখের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেন। পরে ওই কাগজে তাঁর জবানবন্দি নিজের ইচ্ছামতো লিখে তাঁকে ৩ নম্বর সাক্ষী বানিয়ে দেন। এ ছাড়া আরও দুজন সাক্ষীও জানেন না তাঁরা মামলার সাক্ষী। মূলত চেক ও স্ট্যাম্প জোরপূর্বক নেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাই মিথ্যা প্রতিবেদন ও আজাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিয়ে সাক্ষী বানিয়ে দেওয়ার নিন্দা জানান তাঁরা। 

বিবাদী আতিয়ার শেখ বলেন, ‘আমরা এত দিন জেনে এসেছি, পিবিআই সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয় আদালতে। কিন্তু এসআই রূপকুমার আমাদের ধারণা মিথ্যা করে দিয়েছেন। তাই আমরা তাঁর উপযুক্ত বিচার চাই। তাঁর বিরুদ্ধে শিগগিরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর দরখাস্ত করব।’ 

এ বিষয়ে মামলার বাদী নাসির উদ্দিন মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের বিষয়ে পিবিআইয়ের এসআই রূপকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আর কারও কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিইনি। প্রয়োজনীয় নথি রেখেই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আপনারা সেগুলো দেখতে পারেন।’ 

গোপালগঞ্জের পিবিআই পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের পিবিআইতে অর্থনৈতিক লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই। এ মামলার বিষয়ে না জেনে কিছু বলতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত