Ajker Patrika

‘বাবারে যে জীবনের তরে শেষ করে দিবে ভাবতে পারিনি’ 

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
‘বাবারে যে জীবনের তরে শেষ করে দিবে ভাবতে পারিনি’ 

শরীয়তপুরের চিতলিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কুদ্দুস বেপারী (৮০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার ঈদের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় সকাল ৯টার দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হারুন হাওলাদার ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছালাম হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

নিহত কুদ্দুস বেপারী চিতলিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। 

পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা বলছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চিতলিয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ হারুন হাওলাদার ও ছালাম হাওলাদারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ঈদের দিন নামাজ শেষে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতন্ডতা বাধলে ছালাম হাওলাদারের সমর্থকেরা হারুন হাওলাদারের সমর্থক ইমাম হোসেনকে মারধর করে। এরই জেরে হারুন হাওলাদারের সমর্থকেরা সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছালাম হাওলাদারের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১টার দিকে গুরুতর আহত কুদ্দুস বেপারীর মৃত্যু হয়। আহত সৈয়দ সরদার (৪৫) ও জয়নাল বেপারীর (৭৫) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছে চিকিৎসকেরা। 

নিহত কুদ্দুস বেপারীর মেয়ে হামিদা বেগম বলেন, ‘আগেও আমার ভাই ও আত্মীয়-স্বজনদের তাঁরা মারপিট করছে। ঈদের নামাজ পরে বাড়ি ফেরার পথে আমার বাবার ওপর হামলা করে হারুন হাওলাদারের লোকজনেরা। খবর পেয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে গেলে আমার ভাইয়ের মেয়ে ও ভাইয়ের বউকে লাঞ্ছিত ও নির্যাতন করেছে সন্ত্রাসীরা। বাবারে যে জীবনের তরে শেষ করে দিবে ভাবতে পারিনি। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’ 

এ বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সালাম হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে চিতলিয়া ইউপি নির্বাচন বাতিলের পর নতুন করে ১৫ জুন পুনঃ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে হারুন হাওলাদারের সমর্থকেরা। ঈদের দিনে পরিকল্পিতভাবে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করে তারা। হামলায় আমরা বর্ষীয়ান এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হারালাম। এর আগেও একাধিকবার তাঁরা নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হারুন হাওলাদারের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি। 

এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ হারুন হাওলাদার ও ছালাম হাওলাদারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে ঈদের নামাজ শেষে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সংঘর্ষে কুদ্দুস বেপারী নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

ওসি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

খিলগাঁওয়ে পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ফ্লাইটে অসুস্থ ব্যক্তিকে সহযাত্রীর চড়, তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ

সাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত