Ajker Patrika

প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধর্ষণের শিকার গার্মেন্টস কর্মী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৩৩
প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধর্ষণের শিকার গার্মেন্টস কর্মী

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী (১৮)। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই তরুণী গাজীপুরের এক গার্মেন্টসে কাজ করতেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন—উপজেলার বীর পাকুন্দিয়া গ্রামের আলী আকবরের ছেলে মো. কাউসার আহম্মেদ (২৪), একই গ্রামের খসরু মিয়ার ছেলে জুবায়েদ হাসান শুভ (১৮) ও উপজেলার চর পাকুন্দিয়া গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন রাজু (২৪)।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী তরুণী ও পুলিশ জানায়, পাকুন্দিয়ার বাসিন্দা ভুক্তভোগী তরুণী জীবিকার তাগিদে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। চাকরি করার সময় একই উপজেলার সাব্বির হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বন্ধুত্ব হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ের করবে। গতকাল বিয়ের কথার জন্য ওই তরুণী তাঁর বাড়িতে আসে। ওই দিন বিকেলেই দেখা করে সাব্বিরের সঙ্গে। পরে সাব্বির ওই তরুণী এবং তাঁর বন্ধু আশরাফকে নিয়ে অটোচালক হুমায়ুন কবিরের অটোরিকশায় ঘুরতে যায়।

ঘুরতে গিয়ে উপজেলার তারাকান্দি বাজারে পৌঁছালে কাউসার, জুবায়েদ, মেহেদী হাসান, হৃদয়, বাবু, তোফাজ্জল ও ইয়াসিন অটোরিকশাটি আটকিয়ে ভয় দেখিয়ে তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে নিয়া যায়। পরে ওই তরুণীর প্রেমিকের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভুক্তভোগী তরুণী এবং তাদের সঙ্গে থাকা অটোরিকশাটি ছাড়বে না বলে জানায়।

এদিকে অভিযুক্তরা সাব্বির, হুমায়ুন ও ভুক্তভোগীর বন্ধু আশরাফকে মাদ্রাসার মাঠে ভয় দেখিয়ে দাঁড় করিয়ে মাদ্রাসার পাশের একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে নিয়ে যায় ওই তরুণীকে। প্রথমে হৃদয়, পরে মেহেদী, বাবু, কাউসার এবং সর্বশেষে আসামি জোবায়েদ হোসেন শুভসহ পাঁচজন ধর্ষণ করে ওই তরুণীকে।

ঘটনার সময় মাদ্রাসার মাঠে থাকা সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ টাকা সংগ্রহের কথা বলে কৌশলে থানায় এসে পুলিশকে জানায় তাদের অটোরিকশা আটকে টাকা দাবি করছে কয়েকজন তরুণ। এই সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে অটোরিকশাটি জব্দ করা অবস্থায়ও পায়। পরে পুলিশ জানতে পারে অটোতে আসা এক তরুণীকে পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশ পরিত্যক্ত ঘরটিতে গিয়ে দেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করছে। পুলিশের অবস্থান বুঝতেই সটকে পরে তারা। তবে কাউসার ও জুবায়েদকে ঘর থেকে পালানোর সময় আটক করে পুলিশ। অভিযান চালিয়ে সহযোগী তোফাজ্জলকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করে। ঘটনার পরপরই কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। তরুণীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ রোববার নারী, শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।

ওই তরুণীর প্রেমিক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা বিয়ে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই কারণেই সে আসে পাকুন্দিয়ায়। আমি আমার ফুফুর বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমার ফুফু রাজি হলেই আমার পরিবার বিয়েতে সম্মতি দিত। তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার সময় এই কথাগুলো বলছিলাম। হঠাৎ কাউসার, জুবায়েদ, মেহেদী, হৃদয়, বাবু, তোফাজ্জল ও ইয়াসিন মিলে আমাদের অটোরিকশা আটকিয়ে মাঠে নিয়ে যায়। পরে টাকা দাবি করে। ওই পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।’

সাব্বিরের বন্ধু আশরাফ বলেন, ‘তারা যে টাকা দাবি করছে সে টাকা আমাদের কাছে নাই। আমরা কোথা থেকে টাকা দিব। পরে মাথায় আসে পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলে আমাদের অটোরিকশাটি উদ্ধার করে দিবে তাই পুলিশের কাছে চলে যাই। কিন্তু তারা এমন ঘটনা ঘটাবে তা একবারও ভাবিনি।’

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, ‘গ্রেপ্তার তিন আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আজ রোববার দুপুরে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

একে একে আট বিয়ে, নয়বারের বেলায় গ্রেপ্তার ‘লুটেরা দুলহান’

অদৃশ্য শর্তে বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পের ১৫% শুল্ক ছাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত