Ajker Patrika

ফরিদপুরে আজকের পত্রিকার সাংবাদিকের বাবা-মাসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম, পুলিশ বলছে চুরির ঘটনা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০: ৫৭
Thumbnail image
হামলায় আহত সাংবাদিক সৌগত বসুর বাবা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের মধুখালীতে আজকের পত্রিকার সাংবাদিক (নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা) সৌগত বসুর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। চুরির ঘটনায় বাঁধা দেওয়ায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন তাঁরা।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন গ্রামের পূর্বপাড়া বোস বাড়িতে সশস্ত্র এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

আহতরা হলেন—সৌগত বসুর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৫), মা কাকুলী বসু (৬০) ও প্রতিবেশী কিশোরী প্রীতি বসু (১৫)। তাঁরা সকলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অর্ণব বলেন, শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তাঁর মাথার হাড় ভেঙে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যদের আঘাত গুরুতর নয়।

আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে তাঁরা টিভি দেখছিলেন। এ সময় ঘরের ভেতর একজনকে দেখতে পান। তাঁকে ধাওয়া দিলে তিনি বাড়ির দোতলায় অবস্থান নেন। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় কোপ দেওয়া হয়। পরে অন্যরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্ত।

সৌগতের কাকিমা শুক্লা বসু বলেন, ‘আমরা ফরিদপুর শহরে থাকি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় তারা আমাকে ভিডিও কল দিয়ে বাঁচানোর আকুতি জানান। পরে আমি প্রতিবেশীদের জানাই। পরে তাঁরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।’

হামলায় আহত সাংবাদিক সৌগত বসুর মা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলায় আহত সাংবাদিক সৌগত বসুর মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সৌগত বসু বলেন, ‘বাড়িতে আমার বাবা-মা ছাড়া কেউ থাকে না এবং আমার অসুস্থ মাকে দেখাশোনা করত প্রীতি। তারা এখন গুরুতর অসুস্থ, পুরো ঘটনা এখনো বলা যাচ্ছে না। একজন নাকি একাধিক লোক ছিল সেটিও বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলা নেই।’

ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার জীবন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে শ্যামলন্দ দাদার বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে শ্যামল দা ও তাঁর স্ত্রীকে দেখাশোনার জন্য প্রীতি মালো (১৫) নামের এক কিশোরী থাকেন। এছাড়া বাড়িতে আর কেউ থাকেন না। তাঁর তিন ছেলে বিভিন্ন জেলায় চাকরি করেন।

হামলায় আহত প্রতিবেশী মেয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলায় আহত প্রতিবেশী মেয়ে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি বলেন, রাতে হঠাৎ তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখে শ্যামলেন্দু দা ও তাঁর স্ত্রীকে কোপানো হয়েছে এবং কাজের মেয়েটিকে স্টিলের স্টিক দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তাঁরা এ সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, ‘এদের কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। মনে হচ্ছে চুরি করতে ঢুকেছিল। দেখা ফেলায় হামলা করে।’

এদিকে খবর পেয়ে মেডিকেল হাসপাতালে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমাসহ পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ। এ সময় শৈলেন চাকমা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ১৪-১৫ বছর এক কিশোর ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে গৃহকর্তা ধাওয়া দিলে তাঁকে এবং অন্যদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত