Ajker Patrika

বালু উত্তোলনে ভাঙনের শঙ্কা

  • কিছুদিন ধরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
  • ভাঙনের আশঙ্কায় থাকা ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা গতকাল ড্রেজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন।
  • পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ধলেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সৈয়দপুর কান্দা এলাকায় ড্রেজারে হামলা চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধলেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সৈয়দপুর কান্দা এলাকায় ড্রেজারে হামলা চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলেশ্বরী নদীতে কিছুদিন ধরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে দুই পারের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ির পাশাপাশি ফসলি জমি ও সৈয়দপুর-সোনাকান্দা সেতুসহ নানা স্থাপনা নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

এ ঘটনায় সিরাজদিখানের ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ড্রেজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর কান্দা এলাকার পাশে নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) থেকে পাওয়া একটি পুরোনো অনুমতির কাগজ দেখিয়ে সিরাজদিখান ও কেরানীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় খনন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দুই ব্যক্তি—আয়ুব আলী ও আশকর আলী। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা শুধু বলে, কাগজ যাচাই হচ্ছে। এই সুযোগে প্রভাবশালীরা দিনের পর দিন নদী ও আমাদের জমি ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সৈয়দপুর কান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক আলী নেওয়াজ উজ্জ্বল জানান, কিছুদিন ধরে ধলেশ্বরী নদীতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে দুই পারের বাড়িঘর, ফসলি জমি ও বসতভিটা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বালু উত্তোলন যদি দ্রুত বন্ধ না করা হয় তাহলে তাঁরা বড় পরিসরে মানববন্ধন ও গণ-আন্দোলনের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।

এদিকে বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল একটি ড্রেজারে হামলা চালান এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, এ বিষয়ে একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে নদীর দুই পারের বাসিন্দারা নিজেরাই ড্রেজারটি বন্ধ করে দেন। এ সময় ড্রেজারে ভাঙচুর করা হয়।

জানতে চাইলে বালু ব্যবসায়ী আয়ুব বলেন, ‘আমি সরকারি অনুমোদন নিয়েই বালু উত্তোলন করছি। কিছু লোক আমার কাছে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না দেওয়ায় আমার ড্রেজারসহ আনুষঙ্গিক মালপত্র ভাঙচুর করেছে। আমি বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছি। অথচ কিছু প্রভাবশালী ও স্বার্থান্বেষী মহল আমার কাজে বাধা দিচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপত্তা দাবি করছি।’

এ বিষয়ে শেখরনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘ধলেশ্বরী নদীতে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ড্রেজারে আক্রমণ চালায়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয় লোকদের বলি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানাতে। পরে সবাই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা আক্তার বলেন, ‘ধলেশ্বরী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং এর আগেও পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে যেহেতু নদীর ওই অংশ কেরানীগঞ্জ উপজেলার সীমানায় পড়ে, তাই আমরা সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারিনি। শুনেছি, ড্রেজারের মালিকপক্ষ উচ্চ আদালত থেকে ছয় মাসের রিট (স্থগিতাদেশ) নিয়েছে। আজ (গতকাল) স্থানীয় লোকেরা নদীভাঙনের আশঙ্কায় ক্ষিপ্ত হয়ে ড্রেজারের কিছু অংশ সরিয়ে নিয়েছে বা ভাঙচুর করেছে বলে জেনেছি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এখন ইরানের ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে ঢুকতে পারবে না ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান

ভারী বৃষ্টি কোথায় কতদিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

দক্ষিণ এশিয়ার নয়া আঞ্চলিক জোটের সম্ভাব্য নাম ‘সাকা’, প্রথম সম্মেলন ইসলামাবাদে

ইয়েমেনে ক্লিনিক খুলে ফেঁসে গেছেন ভারতীয় নার্স, এখন ফাঁসির অপেক্ষা

সেভেন সিস্টার্সকে সংযোগকারী ভারত-মিয়ানমারের কালাদান প্রকল্প চালু হবে ২০২৭ সালে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত