Ajker Patrika

নারীকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, থানায় লিখিত অভিযোগ

নারীকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, থানায় লিখিত অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুর এক বিধবা নারীকে প্রকাশ্যে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। গতকাল রোববার সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার ইয়াকুব আলী মাস্টার টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাইতে অবুঝ ছেলে-মেয়ে নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই নারী। 

ভুক্তভোগী ওই নারী শাহীন সুলতানা সুইটি প্রয়াত শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ্ শাহিদের স্ত্রী। অভিযুক্ত মো. শাহ্ আলম কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী ছেলে। 

ভুক্তভোগী শাহীন সুলতানা সুইটি বলেন, স্বামী শহিদুল্লাহ শহিদের মৃত্যুর পর থেকে ভাশুর শাহ আলম স্বামীর সহায় সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। ইতিপূর্বে আমাকে বাড়ির সকল গেটে তালা ঝুলিয়ে তিন দিন অবরোধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পাই। এ ছাড়া সব সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে অভিযুক্ত শাহ আলম। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বামীর প্রতিষ্ঠান এয়াকুব আলী মাস্টার টাওয়ারের সামনে গেলে অভিযুক্ত শাহ আলম অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করেন। তখন এর প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে মারধরসহ শ্লীলতাহানি করে। তখন গাড়ি ড্রাইভার আমির হোসেন আমাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত আমার গাড়ির চালক আমির হোসেনকেও মারধর করে। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ন্যায় বিচার চাইতে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।’ 

ভুক্তভোগী গাড়ি চালক আমির হোসেন জানান, এর আগেও অভিযুক্ত শাহ আলম তাঁকে তিন দিন মারধর করেছে। কি জন্য মারধর করে? এমন প্রশ্নের জবাবে ড্রাইভার বলেন, ‘আমাকে গাড়ি না চালানোর জন্য বলে। এতে রাজি হইনি বলে আমাকে মারধর করে।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইয়াকুব আলী মাস্টার টাওয়ারের নিরাপত্তা কর্মী বলেন, ‘আজকের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর কোনো দোষ নেই। কোনো কিছু বুঝার আগেই মারধর শুরু করেছে। আমরা মালিকের চাকরি করি বলে প্রতিবাদ করতে পারিনি। 

এদিকে প্রকাশ্যে দিবালোকে মারধরের ঘটনার একটি সিসিটিভির ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করে অনেকেই নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করে বিচার দাবি করছেন। 

যুবলীগ নেতা হাফিজুর রহমান তাঁর নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, ‘অভিভাবকহীন হলে আমাদের দেশে যা হয়, প্রয়াত বিএনপির নেতা শহিদুল্লাহ্ শহিদের স্ত্রীকে প্রকাশ্যে ঘাড় ধরে বেড় করে দিচ্ছে শাহ আলম।’ 

মো. রাসেদুল ইসলাম রাসেল নামের একজন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শাহ আলম ভাইকে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে শহিদুল্লাহ ভাইয়ের পা ভাঙল। কিন্তু আজ মরহুম শহিদ ভাইয়ের স্ত্রী'কে জনসম্মুখে মারল শাহ আলম ভাই।’ 

শফিকুল ইসলাম লিখেছেন কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার, যেখানে একজন বিধবা নারীকে নিরাপত্তা দিবে, সেখানে অর্থের লোভে নির্যাতন। হুসাইন বুলবুল তাঁর নিজস্ব ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, প্রশাসন এখনো চুপ কেন? তামাশা দেখে নাকি? 

এদিকে অভিযুক্ত শাহ আলমের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে তাঁর ছোট ভাই মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়টি সঠিক নয়। 

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই মো. মনির হোসেন বলেন, জাতীয় সেবা সুরক্ষা নম্বর ৯৯৯ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত যুবক শাহ আলমকে পাওয়া যায়নি। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত