Ajker Patrika

দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তনে সরকারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন আয়োজিত ‘সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন আয়োজিত ‘সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: সংগৃহীত

দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, যদিও বর্তমান সরকার সবকিছু রাতারাতি পরিবর্তন করতে পারবে না, তবুও দলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অনেক কাজ করার সুযোগ তাদের রয়েছে।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন আয়োজিত ‘সংস্কার ও রাষ্ট্র ভাবনায় হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক সেমিনারে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দলিত সম্প্রদায়ের আবাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো মৌলিক বিষয়গুলোতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা সম্ভব। যদি সরকার এই ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করে, তবে বৈষম্য নিরসনে তাদের সদিচ্ছা প্রমাণিত হবে। একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে আসা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।

অতীতের সরকারগুলো দলিতদের জন্য পর্যাপ্ত কাজ করেনি উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কিছু বেসরকারি সংস্থা প্রকল্পের ভিত্তিতে কাজ করলেও তা যথেষ্ট নয়। তিনি মনে করেন, সকল নিপীড়িত মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। অধিকার আদায়ের জন্য সবার একযোগে কাজ করা জরুরি।

আইনজীবী সারা হোসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি কোটা বাতিলের আন্দোলন ছিল না। তিনি বলেন, কোটা থাকা উচিত এবং এর পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সমতা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবেও এটি স্বীকৃত। তাই দলিত ও হরিজনদের জন্য অবশ্যই কোটা থাকা প্রয়োজন।

লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ আদমশুমারিতে দলিতদের পরিচয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, দলিতদের উন্নয়নে কোনো কর্মসূচি নিতে হলে তারা কোথায় আছে, তা জানা প্রয়োজন। তাই আগামী আদমশুমারিতে তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তিনি আরও বলেন, রাজনীতি এখন কৌশলনির্ভর হয়ে গেছে এবং গত ১৫ বছরে বিচ্ছিন্ন আন্দোলনের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে মানুষ পরিচয় দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলেও এখন বিভক্তি বাড়ছে। এই বিভক্তি কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ আধিপত্য তৈরি করতে চাইছে। তিনি মনে করেন, সুস্থ রাজনৈতিক আবেদন যখন কাজ করে না, তখন সংখ্যাগরিষ্ঠের পরিচয়ের ওপর নির্ভর করতে হয় এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

সেমিনারে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠনের পক্ষ থেকে আট দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: বৈষম্যকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে কমিশন গঠন ও ট্রাইব্যুনাল স্থাপন, দলিতদের জন্য বিনা মূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা, শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে কোটা নিশ্চিত করা, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণ, আবাসনব্যবস্থা, সাংবিধানিক স্বীকৃতি, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ দলিতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

সেমিনারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিজয় কৃষ্ণ দেবনাথও উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আওয়ামী লীগকেও পথভ্রষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা

গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের বিবৃতিতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত