Ajker Patrika

অর্থ পাচার মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪, ১৬: ৫৩
অর্থ পাচার মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন কারাগারে

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ আস-সামছ জগলুল হোসেন কারাগারে পাঠানোর এই নির্দেশ দেন।

সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান তিনি। দুপুরের দিকে শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তাপস কুমার পাল।

আরিফুর রহমান দোলন ‘ঢাকা টাইমস’ এর সম্পাদক। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহসভাপতি এবং গত জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুরে সংসদ সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।

এর আগে এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আরিফুর রহমান দোলন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পান। ছয় সপ্তাহ পর হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তৎকালীন বিচারক এত দিন জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করেননি। আজ ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। দোলনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট বাহারুল ইসলাম।

এদিকে এই মামলাটিতে সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরসহ ৪৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। আদালত অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২২ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

গত বছর ২৫ জুন এই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। সম্পূরক অভিযোগ পত্রে নতুন ৩৭ জন আসামি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগের অভিযোগপত্রে ১০ জন আসামি ছিলেন।

এই মামলায় ৪৭ আসামির মধ্যে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তাঁর ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমানসহ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী রয়েছেন।

গত বছর ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এ ছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তাঁরা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই।

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তাঁরা। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।

পরে এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য নির্ধারিত তারিখে রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহমুদ হাসান একটি দরখাস্ত দিয়ে আদালতকে জানান, এই মামলায় ৬ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে অর্থ পাচারের দায় স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে আসামি নিশান মাহমুদ শামীম ও বিল্লাল হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কিন্তু তাঁদেরকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অন্যদিকে অন্যান্য আসামির স্বীকারোক্তিতে অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়ে গেছে এমন কয়েকজনের নাম বলেছেন। তাঁদেরকেও মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এই অবস্থায় আদালত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। পরে অধিকতর তদন্ত শেষে আরও ৩৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ধাক্কায় রাস্তায় ট্রলির নিচে পড়ে যুবকের মৃত্যু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন পথচারী মহিদুল ইসলাম (৪০)। হঠাৎ মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি তাঁকে ধাক্কা মারলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি দ্রুতগামী ট্রলি তাঁকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান মহিদুল। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মহিদুল উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কৈগাড়িপাড়া গ্রামের পোকার ইসলামের ছেলে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মহিদুলকে ধাক্কা দেন অজ্ঞাতপরিচয় মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। এ সময় চলন্ত একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলি তাঁকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ বিষয়ে নিহতের পরিবার কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় রেলসেতুর নিচে নারীর লাশ, ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রেলসেতুর নিচ থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর মাথায় আঘাতের ক্ষত রয়েছে। পুলিশ ও তাঁর স্বজনদের ধারণা, ধর্ষণের পর ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন রেলসেতুর নিচ থেকে ৫২ বছর বয়সী ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত নারী উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী ও সন্তান রয়েছে।

জানা গেছে, আজ সকাল ৬টার দিকে রেলসেতুর নিচে এক নারীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে খবর পেয়ে ওই নারীর ছেলে এসে তাঁর লাশ শনাক্ত করে। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

নিহত নারীর ছেলে বলেন, ‘মা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল শুক্রবার সকালে গোয়ালন্দ রেলস্টেশনে মাকে দেখা গিয়েছিল বলে জানা গেছে। এরপর সেখানে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে লাশের সন্ধান পেয়ে কুমারখালী এসে মাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হতে পারে বলে পুলিশের সন্দেহ। সে জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করা নারীর মাথায় আঘাতের ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণের পর তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে এ বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে মামুন-রিটন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত
সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান রিটন। ছবি: সংগৃহীত

সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির ১৪ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সাবেক সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ মামুনকে সভাপতি করা হয়েছে। আর সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে নগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মাহাফুজুর রহমান রিটনকে।

আজ শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটির কথা জানানো হয়।

আংশিক কমিটিতে নজরুল হুদাকে সিনিয়র সহসভাপতি এবং আসলাম সরকার, ওয়ালিউল হক রানা, আলী আশরাফ মাসুম সফিকুল ইসলাম সাফিক, আবুল কালাম আজাদ সুইট, মুক্তার হোসেন ও জয়নাল আবেদিন শিবলীকে সহসভাপতি করা হয়েছে।

এ ছাড়া বজলুল হুদা মন্টুকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রবিউল ইসলাম মিলুকে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং এরশাদ আলী ঈশা ও মাইনুল আহসান পান্নাকে সদস্য করা হয়েছে। পরবর্তীকালে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর আগে গত ১০ আগস্ট মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর ২ মাস ২২ দিন পর আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
আজ বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সালমান শাহর ভক্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সালমান শাহর ভক্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তরুণ প্রজন্মের আইডল চিত্রনায়ক সালমান শাহর হত্যা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাঁর হত্যার রহস্য এখনো উন্মোচন করা হয়নি।

বক্তারা জোর দাবি জানান, এখন সময় এসেছে প্রকৃত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা এবং কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।

চুয়াডাঙ্গা সালমান শাহ ভক্তকুলের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন নাফিসা সুরভি। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিরণ উর রশিদ শান্ত প্রধান অতিথি হিসেবে এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় সালমান শাহর বিপুলসংখ্যক ভক্ত উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ককে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে তাঁর নিজ বাড়িতে কৌশলে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাঁর মা নীলা চৌধুরী মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করেন। এই হত্যা মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরাসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত