Ajker Patrika

ট্রান্সকমের ওয়ালিউর রহমানের লাশ কবর থেকে তোলার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০: ৫৮
Thumbnail image

ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছেলে আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের লাশ কবর থেকে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার এই নির্দেশ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকাকে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী গত ২৪ মার্চ এই আদেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। 
আদেশে বলা হয়েছে, একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।

মামলা দায়েরের পরদিন গুলশান থানা লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার জন্য আদালতের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আদেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন দপ্তর থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে সিমিনের ভাইকে হত্যার অভিযোগে গুলশান থানায় গত ২২ মার্চ এই মামলা দায়ের করা হয়। সিমিনের ছোট বোন শাযরেহ হক মামলা দায়ের করেন। এজাহারে শাযরেহ উল্লেখ করেন—তাঁর ভাইকে বিষ প্রয়োগ বা শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। 

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সিমিন রহমানের ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপক ডা. মুরাদ এবং পরিচালক (বিপণন ও বিক্রয়) ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম, ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) কামরুল হাসান, আইন কর্মকর্তা মো. ফখরুজ্জামান ভূঁইয়া, ব্যবস্থাপক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) কেএইচ মো. শাহাদত হোসেন, কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ও সেলিনা সুলতানা এবং গ্রুপের কর্মচারী রফিক ও মিরাজুল। 

মামলার এজাহারে শাযরেহ হক বলেন, মুসলিম শরিয়া আইন অনুযায়ী তিনিসহ তাঁর মৃত বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান (৫৭) এবং মামলার এক নম্বর আসামি সিমিন রহমান তাঁর পিতার সকল স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ। 

লতিফুর রহমানের স্থাবর সম্পত্তিসহ তাঁর প্রতিষ্ঠা করা ট্রান্সকম গ্রুপের শেয়ার এবং পজিশন নিজেদের অনুকূলে হস্তগত করাসহ তাঁকে (শাযরেহ) এবং তাঁর বড় ভাইকে (আরশাদ) সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন। 

তাঁদের জাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত বছরের ৮ জুন আরশাদ ওয়ালিউর রহমান পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করেন। এতে সিমিন রহমান আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তখন তিনি জীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এর ৮ দিন পর গত ১৬ জুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আরশাদ। আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান-২ এর নিজের বাসার শয়ন কক্ষে মৃত ও চিৎ অবস্থায় দেখতে পান। যদিও তাঁর শরীরে কোনো জটিল রোগ ছিল না। 

মামলার এজাহারে শাযরেহ হক আরও বলেন, ঘটনাস্থলে সকল আসামিকে তিনি দেখতে পান। কিন্তু তাঁর মারা যাওয়ার কথা বা অসুস্থতার কথা কেউই জানাননি। পরে দ্রুত তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে মৃত্যুর সনদপত্র নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করেন এবং সেদিন বিকেলেই দাফন করেন। 

শাযরেহ হক মামলায় উল্লেখ করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকেরা সিমিন রহমানের উদ্দ্যেশে বলেছেন, উনি অনেক আগেই মারা গেছেন। কেন তাঁকে এত পরে হাসপাতালে আনা হলো? তখন পারিবারিক চিকিৎসক ডা. মুরাদ হাসপাতাল প্রশাসনকে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ রিপোর্ট করার প্রয়োজন নেই। 

শাযরেহ হক আরও উল্লেখ করেছেন, তিনি মনে করেন ১১ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে তাঁর বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বিষ প্রয়োগ বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে, যা আসামিদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে। 

এর আগে কোম্পানির সম্পত্তি ও শেয়ার-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বড় বোন ও গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান মা শাহনাজ রহমানের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন শাযরেহ। তাতে আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। 

ওই মামলায় বিশ্বাসভঙ্গ, জালিয়াতি ও দলিল জালের মাধ্যমে শাযরেহ ও তার প্রয়াত ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে ১০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের পারিবারিক সম্পত্তির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত