Ajker Patrika

কষ্টে আছেন ঢাবির ক্যানটিন কর্মীরা

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৫: ০৪
কষ্টে আছেন ঢাবির ক্যানটিন কর্মীরা

‘আম্মার অসুখডা কিছুতেই কমতেছে না। ওষুধ কিনবার কথা কইয়্যা খালি টাকা চায়। (এদিকে) কত দিন ধইরা হলের দোকানডাও বন্ধ। কাজ না থাকলে টাকা পামু কই। আমি ছোট মানুষ। মায়রে যে কী কইয়া বুঝামু।’

এভাবে নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরে মাসুম (১৪)। আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হলে মাসুম জানায়, অভাবের তাড়নায় স্কুল ছেড়ে করোনার আগে প্রায় তিন বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের একটি দোকানে কাজ করে আসছিল সে। গত বছরের এপ্রিলে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে বাড়ি চলে যায় মাসুম। পরবর্তী সময়ে মায়ের চিকিৎসার অর্থ জোগাতে ফের টিএসসির একটি ছোট্ট চায়ের দোকানে কাজ শুরু করে।

মাসুম জানায়, বন্ধ ক্যাম্পাসের টিএসসিতে আগের মতো বিক্রি নেই। তাও পেটের দায়ে অল্প টাকার বিনিময়ে কাজ করে যাচ্ছে।

দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মাসুমসহ ঢাবির বিভিন্ন হলের ক্যানটিন মালিক, বাবুর্চি, দোকানদার ও অন্যান্য কর্মচারী একই অবস্থায় দিন পার করছেন বলে জানা গেছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ক্যানটিনের মালিক ডালিম সরকার বলেন, ‘গ্রামে বাবার কিছু জমি আছে। চাষ করে কোনো রকমে খাচ্ছি। তবে সংসারে আরও যে বাড়তি খরচ, তা জোগাতে গিয়ে ৩ লাখ টাকার মতো ধার নিসি। দ্রুত ক্যাম্পাস খুললে হয়তো আবার হলে গিয়ে ক্যানটিন চালাব। শোধ দিব ধারের টাকা।’

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ক্যানটিনের ম্যানেজার আজিম মিয়া বলেন, ‘অভাবের কথা কাউরে বলতে পারি না। লজ্জা লাগে। কখনো হাত পাতি নাই।’

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের দোকানদার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন মোবাইল ফোনের অপর পাশ থেকে কেঁদে ওঠেন। জালাল বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। দীর্ঘদিন তাদের স্কুল বন্ধ। ছেলে অঙ্কের স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে চায়। কিন্তু টাকার অভাবে আমি তাকে নানা বাহানা দিয়ে ঘুরাচ্ছি। জানি না, ও আর স্কুলে যাবে কি না।’

টিএসসিতে যাঁরা চা খেতে যান, তাঁদের অনেকেরই প্রিয়মুখ স্বপন মামা। তিনি জানান, লকডাউনে দীর্ঘদিন বাড়িতে বেকার বসে ছিলেন। এর মধ্যে হাজির হয় নানা পারিবারিক সমস্যা।

তাঁর এক প্রতিবন্ধী মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। এদিকে টিএসসির চায়ের দোকানও বন্ধ।

ঢাবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর থেকে মানবিক দিক বিবেচনা করে কোনো দোকান কিংবা ক্যানটিনের ভাড়া নেওয়া হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে ক্যানটিনও খুলবে না বলে কর্মচারীদের জানানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মতো এসব কর্মচারীও দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে ক্যানটিন চালুর দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত