Ajker Patrika

বরাদ্দে বৈষম্য, জলাবদ্ধতা নিরসনে শঙ্কা

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
বরাদ্দে বৈষম্য, জলাবদ্ধতা নিরসনে শঙ্কা

বর্ষা মৌসুমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এই জলাবদ্ধতা নিরসনে সাধারণ ও সংরক্ষিত মোট ৭২ জন কাউন্সিলরের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে থোক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে কাউন্সিলরেরা বলছেন, সবাইকে সমান ভাবে বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। কারণ কোন কোন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সমস্যা প্রকট, আবার কোন কোন ওয়ার্ডে এই সমস্যা নেই। আর আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকেও ছোট বড় ওয়ার্ড রয়েছে। কিছু কিছু ওয়ার্ডে দশ লাখ টাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। 

তবে ডিএনসিসির তথ্য বলছে, এই বছর প্রথমবার বৃষ্টিতে ডিএনসিসির ১০৩টি স্থানকে জলাবদ্ধ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পর ডিএনসিসির অধিকাংশ এলাকায় এখন জলাবদ্ধতা নেই। আগের বছরগুলোতে সামান্য বৃষ্টিতেই ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ডুবে যেতো, জলজটে নগরবাসীকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো। কিন্তু এবার রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতেও নগরবাসীকে জলজট সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে না। 

তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটুসমান পানি হয়ে যায়। মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, রোকেয়া সরণি, শ্যামলী, খিলক্ষেত, মহাখালী, কাকলী এমন জলজট বেশি দেখা যায়। তবে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের রাস্তাগুলো জলাবদ্ধতায় মাঝেমধ্যে নর্দমায় পরিণত হয়। 

সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বেগম মেহেরুন্নেছা হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকায় (মিরপুর সেকশন ১১,১২, ১০) জলাবদ্ধতা নেই। তবে বরাদ্দের টাকায় অন্য অন্য কাজ করবো।’ 

ডিএনসিসির ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বেরাইদ, ভূঞাপাড়া, বাড্ডা বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আইয়ুব আনছার মিন্টু বলেন, ‘এত এত সংকট সামান্য ১০ লাখ টাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। এই টাকা আপাতত টুকটাক কাজ করার জন্য এটা মেয়র সাহেব দিয়েছেন। অনেক জায়গায় কাজ আছে, অনেক জায়গায় নেই। গুলশান বনানীতে সমস্যা কম, আমাদের এলাকা কিছুটা নিচু এলাকা হওয়ায় সমস্যা বেশি।’ 

৩৮ ওয়ার্ডের উত্তর বাড্ডা, পূর্বাচল, রসুলবাগ, বাগানবাড়ি এলাকায় যেন সমস্যার শেষ নেই। কাউন্সিলর শেখ সেলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডের জনসংখ্যা বেশি, এলাকার আয়তনও বেশি। সে হিসেবে বরাদ্দ কম। ওয়ার্ডের আয়তন, জনসংখ্যা অনুপাতে বরাদ্দ বেশি দেওয়া উচিত। দশ লাখ টাকার কথা শুনেছি, তবে তা এখনো হাতে পায়নি। নিজস্ব টাকায় নাগরিক ভোগান্তি কমাতে কাজ করে যাচ্ছি।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জলাবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পর ডিএনসিসির অধিকাংশ এলাকায় এখন জলাবদ্ধতা নেই। তবে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা রয়েছে। তা নিরসনেও মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে। সব ওয়ার্ডে সমান বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা আছে, তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবেন। যাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা নেই, তারা অন্য কাজ করবেন।’

টোটকা পদ্ধতিতে সমস্যা নিরসনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাউন্সিলরদের টাকা দিয়েছি। এখন বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে বিভিন্ন এলাকায় সমস্যা দেখা দেয়। টোটকা পদ্ধতিতে জলাবদ্ধতা সারাতে এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। যেখানে পানি আটকাবে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য এই বরাদ্দ। খরচ করার পর যদি আরও টাকা লাগে সেটা সিটি করপোরেশন দেবে। যাদের জলাবদ্ধতা নেই, তারা অন্য টুকটাক কাজ করবে। নতুন ওয়ার্ডে সমস্যা অনেক বেশি, এর জন্য বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত