Ajker Patrika

প্রেমিকাকে ট্রেনে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বলাকা এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিত্যক্ত কামরায় (বগিতে) নিয়ে প্রেমিকা আসমা আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে প্রেমিক মারুফ হাসান বাঁধনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

আসমা পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিনপাড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের মেয়ে। তিনি স্থানীয় খানবাহাদুর মোখলেসুর রহমান মাদ্রাসা থেকে ২০১৮ সালে দাখিল (এসএসসি) পাস করে আলিমে ভর্তি হয়েছিলেন। একই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন বাঁধন। দুজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

রায় ঘোষণার আগে কারাগারে আটক থাকা আসামি বাঁধনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁর উপস্থিতিতে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন এবং বেলা ১টা ৫ মিনিটে রায় পড়া শেষ করেন। পরে তাঁকে মৃত্যু পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেন, ‘আসামি নৃশংসভাবে প্রেমিকাকে হত্যা করেছেন বলে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আসামি যে অপরাধ করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।’

ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারামতে হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট আসামিকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বাঁধনের সঙ্গে মৃত আসমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট তাঁরা পঞ্চগড় থেকে পালিয়ে ঢাকায় আসেন। তাঁরা কোনো আবাসিক হোটেল না পেয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করেন। একপর্যায়ে বলাকা ট্রেনের একটি পরিত্যক্ত বগিতে আসমাকে নিয়ে যান বাঁধন। সেখানে আসমাকে ধর্ষণ করেন তিনি। আসমা চিৎকার করলে তাঁর ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে হত্যা করেন বাঁধন। পরে বাঁধন পঞ্চগড়ে ফিরে যান।

এরপর ট্রেনের বগি বুঝে নিতে গিয়ে ওই বছরের ১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাশ দেখতে পায় রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পরে ওই তরুণীর সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগের মধ্যে জন্মসনদ দেখে তাঁর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরিবারের সূত্রে বাঁধনের কথা জানতে পেরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বাঁধন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে দায় স্বীকার করেন। একই সঙ্গে ঘটনার বর্ণনা দেন।

এ ঘটনায় আসমার চাচা রাজু আহমেদ বাদী ঢাকার রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে বাঁধন তাঁর প্রেমিকা আসমাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করেন।

তদন্ত শেষে একমাত্র আসামি বাঁধনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত