Ajker Patrika

শিবচরে কবিরাজের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচরে কবিরাজের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

মাদারীপুরের শিবচরে দীপঙ্কর সাহা নামের এক কবিরাজের অস্থায়ী বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন কবিরাজ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা জানান, জুমার নামাজের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত একদল মুসল্লি কবিরাজ দীপঙ্করের বসতবাড়িতে হামলা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, দীপঙ্কর ঝাড়-ফুঁকের পাশাপাশি আস্তানায় গাঁজার আসর বসান এবং গান-বাজনাসহ বাৎসরিক অনুষ্ঠান করেন। তাঁর বাড়িতে মুসল্লিরা হামলা করার তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান। 

এলাকাবাসী ও শিবচর থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের উত্তর চর তাজপুর গ্রামের আড়িয়াল খাঁ নদের দুর্গম চরে দীপঙ্কর সাহার বসতবাড়ি। প্রায় ১৫ বছর আগে ঝিনাইদহ থেকে এখানে আসেন তিনি। পরে প্রয়াত ভুলু আকন নামের এক ব্যক্তি তাঁকে নিজের জমিতে অস্থায়ীভাবে থাকতে দেন। সেখানেই আস্তানা গেড়ে বসেন দীপঙ্কর। স্থানীয়দের কাছে তিনি সাধু হিসেবে পরিচিতি। দীপঙ্কর মানুষকে কবিরাজি চিকিৎসা করাতেন। বছরে একবার বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। তাতে গান-বাজনা চলতো।

স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদের পাড়ে দীপঙ্কর বসবাস করে আসছেন। ঝাঁড়-ফুঁকের মাধ্যমে কবিরাজি চিকিৎসার নামে ‘বেদাত’ কাজ চলে ওখানে। গাঁজার আসর বসে। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে শুক্রবার ৩টার দিকে মুসল্লিরা ওই আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়। 

স্থানীয় রাকিব আকন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দীপঙ্কর সাধু টাইপের। কবিরাজি করেন। লোকে বিভিন্ন কথা বললেও ওখানে কোনো অনৈতিক কাজ হতো না। লোকটা নিরীহ। সন্ন্যাসী ধরনের মানুষ। জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র-জনতা হামলা চালিয়ে লোকটিকে মারধর করেন। বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। তা ছাড়া গরু-ছাগল ছিল সেগুলোও নিয়ে যায়। এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’ 

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘শুনেছি, লোকটি সন্ন্যাসী ধরনের। ঝাঁক-ফুঁক করেন। এটা কোনো মাজার নয়। উনাকে লোকজন থানায় নিয়ে আসে। পরে পরিবারের লোকজন এলে মুচলেকা নিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি ভবিষ্যতে ঝাড়-ফুঁক না করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত