Ajker Patrika

‘দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, আমার নিষ্পাপ ছেলে মারা গেল গুলিতে’

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৪, ২১: ৪৩
‘দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, আমার নিষ্পাপ ছেলে মারা গেল গুলিতে’

‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছি। আমার নিষ্পাপ ছেলে বিজিবির গুলিতে মারা গেল। আমি চাই, কোনো আন্দোলনে এমনভাবে কোনো বাবা-মায়ের বুক খালি না হোক।’

নিজের ছেলে রাসেল মিয়ার (৩৬) মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব কথা বলেন হাছেন আলী। তাঁদের বাড়ি নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দুলালকান্দি গ্রামে। ১৯ জুলাই শুক্রবার রাজধানীর রামপুরায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাসেল। মৃত্যুর সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পরিবারের শোক এখনো কাটেনি। বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি।

আরএম মাল্টিমিডিয়া নামে টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও পরিচালক ছিলেন রাসেল মিয়া। রাজধানীর রামপুরা এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার। কিছুক্ষণ পরপর মূর্ছা যাচ্ছেন নিহতের মা-বাবা। ছেলের ছবি হাতে নিয়ে স্মৃতিচারণা করে আর্তনাদ বিলাপ করছিলেন মা। বাড়িতে লোকজনের আনাগোনা রয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছেন আলী বলেন, ‘শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে অপরিচিত একজন ফোন করে জানায় আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে। দ্রুত আমার ছেলের স্ত্রী, আরেক ছেলে ও মেয়ে হাসপাতালে যায়। তার বুকে গুলি লেগেছিল। তারা গিয়ে দেখে সে আর নাই।’

রাসেলের বোন হাসনাত রেহেনা বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে দেখি আমার ভাই আর বেঁচে নেই। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার বুকের বাম পাশে গুলি লাগে। ওই সময়ই তার মৃত্যু হয়।’

উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাউসার কাজল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯ তারিখে রাসেল ঢাকায় গুলিতে মারা গেছে। পরদিন দুপুরে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে প্রথম কেউই বিশ্বাস করতে পারেনি। কারও এমন মৃত্যু কাম্য নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত