Ajker Patrika

জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা ও ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা ও ক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় আজ রোববার বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। 

এ ঘটনায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) তীব্র নিন্দা ও গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির সভাপতি মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক কাজ, মাদকের সংশ্লিষ্টতা এবং এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সম্পৃক্ততা দেশ ও জাতির জন্য চরম অবমাননাকর বলে মনে করে। 

এমএসএফ অনতিবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার এবং ভুক্তভোগী নারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কমিশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত পবিত্র স্থানে এ ধরনের অপরাধ কোনোভাবেই কাম্য নয়। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও কয়েকবার নারীর প্রতি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের নজিরবিহীন, নিকৃষ্ট এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে সারা দেশকে হতবাক করেছিল। বারবার একই স্থানে এমন ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু যৌথ বিবৃতিতে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ নির্যাতনের শিকার নারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদ এই আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করে ঘটনায় জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি দীপক শীল এবং সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের জন্য নিরাপদ নয়। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের মদদে ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় যে ভয় এবং ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে তারই ফলস্বরূপ গতকালের নৃশংস ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ বানাবার জন্য লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।’

জানা গেছে, গতকাল শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে নিয়ে আসে অভিযুক্ত মোস্তাফিজ ও মামুন এবং তার স্বামীর মাধ্যমে ফোন দিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে অভিযুক্তদের একজনের জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বলেন। ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি আশুলিয়া থানাধীন জিরানী এলাকায়। জামা-কাপড় ও জিনিসপত্র নিয়ে ওই নারী ক্যাম্পাসে আসলে তার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবে বলে তাকে হলের সামনে থেকে হলের পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে দলগত ধর্ষণ করে। 

এ ঘটনায় পুলিশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে। 

পরে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিয়ানমারে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে দেশে ফেরার নির্দেশ

সরকারি কর্মচারীদের পদ-পদবি-বেতন কাঠামো নিয়ে পাল্টা অবস্থানে দুই পক্ষ

আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে যা বলল পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য ডন

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

মোহাম্মদপুরে আলোকচিত্রী ও জিগাতলায় শিক্ষার্থী খুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত