Ajker Patrika

নিয়োগে স্বাক্ষর না করায় মাদ্রাসার সভাপতিকে আটকে রেখে মারধর

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, ১৬: ৩১
Thumbnail image

অধ্যক্ষের স্ত্রীর নিয়োগে স্বাক্ষর না করায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মাদ্রাসার সভাপতিকে আটকে রেখে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার উপজেলার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান। 

অভিযুক্তরা হলেন–মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ (৬০), সাবেক ইউপি সদস্য মনির শিকদার (৪৫), গজালিয়া গ্রামের আরিফ সিকদার (২৮), হাবিবুর রহমান (৫৫) ও জাকির শেখ (৪৫)। 

টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক খন্দকার আমিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য ছিল। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মাদ সালেহ তার স্ত্রী রওশন আরা পারভীনকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য চেষ্টা করে আসছিলেন। তাই ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। 

পরে গত ২০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ আবু জাফরের স্ত্রীসহ আরও তিনজন প্রার্থী স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষায় শুধুমাত্র অধ্যক্ষের স্ত্রীকে উত্তীর্ণ করা হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান অধ্যক্ষের তৈরি করা নিয়োগের রেজুলেশনে স্বাক্ষর দেয়নি। পরে সভাপতিকে সভার কথা বলে মাদ্রাসায় ডেকে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। তখন সভাপতি তা করতে না চাইলে বহিরাগতদের দিয়ে মারধর করায় অধ্যক্ষ। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সভাপতি তৈয়াবুর মাদ্রাসায় আসার পরে স্বাক্ষর করতে বলেছি। কিন্তু স্বাক্ষর পরে করবে বলে জানান। তখন অন্য শিক্ষকদের বলেছি, দেখ তার টাকা—পয়সা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা আছে কিনা। কারণ বিপদ তো আমার, পুনরায় নিয়োগ দিলেই এক লাখ খরচ হবে। 

যেখানে ডিজি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছেন সেখানে সভাপতি কেন স্বাক্ষর করবে না। সবাই মিলে অনুরোধ করার পরেও সভাপতি স্বাক্ষর না করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তখন একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু আমি বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেছি।’ 

ভুক্তভোগী শেখ তৈয়বুর রহমান বলেন, গত ২৩ মার্চ (শনিবার) অধ্যক্ষ আবু জাফর শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আমাকে মাদ্রাসায় ডাকে। কিছু সময় পরে অধ্যক্ষ তার স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি স্বাক্ষর না করলে মাদ্রাসা থেকে বের হতে দেবে না বলেও হুমকি দেন। পরে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা বহিরাগতরা অধ্যক্ষের নির্দেশে আমাকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। তাই আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। 

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবেন। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত