কিশোরগঞ্জে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। 

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের দরগাবাজার এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে রাতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আ. লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে বর্তমান আ. লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আ. লীগের নবনিযুক্ত আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। 

দরগা বাজারে শনিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সভা আহ্বান করেন উপজেলা আ. লীগের আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন। এ খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বর্তমান সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ সমর্থিত নেতা কর্মীদের মধ্যে। 

শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে বর্তমান সংসদ সদস্যের সমর্থক নেতা কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দরগা বাজারে গেলে এ উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। জেলা সদর থেকে তলব করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

ঘটনাস্থলে থাকা হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাহর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি ছুড়ে। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ চলাকালে আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল এবং আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।' 

সাবেক সংসদ সদস্য ও পাকুন্দিয়া উপজেলা আ. লীগের নবনিযুক্ত আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'আমি নতুন কমিটির মিটিং ডেকেছি। সব আয়োজন চলছিল; হঠাৎ করে বর্তমান সংসদ সদস্যের লোকজন এসে আমার বাড়িতে হামলা করেছে। এরা সবাই তাঁর চিহ্নিত লোকজন। আমাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিল। আমার এলাকার লোকজন বাঁধা দিলে তাঁরা সংঘর্ষ বাঁধায়। আমি আ. লীগের সভাপতি, পুলিশ আমাকে বলে মিটিং করতে হলে তাঁদের অনুমতি নিতে হবে। আমি আ. লীগের সভাপতি হয়েছি সেটা বর্তমান সংসদ সদস্য ভালো চোখে দেখছেননা। আমিও এ উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলাম, সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার বাড়িতে এসে হামলা করেছে তাঁরা, আমি এ ঘটনায় হতবাক।' 

এসব বিষয়ে জানতে বর্তমান সংসদ সদস্য ও পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।