Ajker Patrika

৩০০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা চেতনা মাল্টিপারপাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৬: ০৬
৩০০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা চেতনা মাল্টিপারপাস

ঢাকা জেলার আশুলিয়ায় ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এক প্রতিষ্ঠানের সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গত মঙ্গল ও বুধবার র‍্যাব-৪-এর সিপিসি-২ কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খানের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারণার দায়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। 

গ্রেপ্তারকৃরা হলেন মো. ইকবাল হোসেন সরকার (৩৫), মো. মাজহারুল ইসলাম (৩৫), মো. মমিন হোসেন (৩৫), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), মো. মিজানুর রহমান (৩৮), মো. আল আমিন হোসেন (২৮), ইব্রাহিম খলিল (৩৫), এস এম মকবুল হোসেন (৪০), ফজলুল হক (৩৫) ও মো. নূর হোসেন (২৭)। 

এ সময় তাঁদের অফিস থেকে ফরম, ঋণগ্রহীতার ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবন বৃত্তান্ত, লিফলেট, সিল, বিভিন্ন নামে সঞ্চয় পাস বই, অব্যবহৃত পাস বই, দৈনিক কিস্তি, ঋণ বিতরণের বিভিন্ন রেজিস্ট্রার, ব্যাংক চেকসহ ব্যাংক স্ট্যাম্প, আইডি কার্ড, দৈনিক কিস্তি আদায়ের শিট, বিভিন্ন প্রকার সার্টিফিকেট, চেক বই, মনিটর, সিপিইউ, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। 

র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। 

ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা যায়, এক হাজারের অধিক পরিবারের প্রায় শতাধিক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এই চক্র। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা জানিয়েছেন, ইসলামি শরিয়া মোতাবেক প্রতি মাসে ১০০০-৩০০০ টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার প্রলোভন ইত্যাদি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের ঢাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। প্রথমে ঠিকঠাক মতো লভ্যাংশ দিলেও এর কিছুদিন পর থেকে টালবাহানা শুরু করে। লভ্যাংশ দেওয়া দূরে থাক, বরং মেয়াদ পূর্ণ হলেও আসল টাকা দিতেই ঝামেলা করে। সর্বশেষ ভুক্তভোগীরা আসল টাকা ফেরত চাইলে শনিবার সকালে টাকা দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের শতাধিক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায় এই প্রতারক চক্রটি।’ 

নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ আরও অনেক কিছু উদ্ধার করা হয়। অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘এই প্রতারক চক্রের মাঠ পর্যায়ের কর্মী-সদস্য রয়েছে। এরা ঢাকা জেলার আশুলিয়া, সাভার ও ধামরাই এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ যেমন—গার্মেন্টসকর্মী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ীসহ নিম্নআয়ের মানুষদের টার্গেট করে প্রতি মাসে ১০০০-৩০০০ টাকা মাসিক লভ্যাংশ এবং স্বল্প সময়ে মাসিক মেয়াদ শেষে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করত। ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করতে তারা বিভিন্ন প্রজেক্ট, গাছের বাগান, ডেইরি ফার্ম, ফ্ল্যাট ও প্লটের প্রলোভন দেখিয়ে ভুলিয়ে নানান কৌশলে প্রতারক চক্রের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হতো। তারা ভুক্তভোগীদের বোঝাতো যে তাদের কাছে এফডিআর করলে এক লাখ টাকায় মাসে ১ হাজার ৮০০ টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা হবে। যা বাংলাদেশে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান দিতে পারে না।’ 

অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প যেমন-বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্প, ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসি, হজ পলিসি প্রজেক্ট, বাগান, ডেইরি ফার্ম ফ্ল্যাট ইত্যাদি দেখিয়ে তাদের কাছে থেকে গাছের বাগান, ডেইরি ফার্ম, হচ্ছে পাঠানো, ফ্ল্যাট ও প্লট ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রাহককে উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল।’ 

গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তবে অসাধু সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাব-৪ এর জোরালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসা পেতে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে

দক্ষিণপন্থীদের কবজায় বাংলাদেশের রাজনীতি: বদরুদ্দীন উমর

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত