Ajker Patrika

বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন: গার্মেন্টসের ৩ শ্রমিককে ফোনে ডেকে মারধর

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ৪৫
বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন: গার্মেন্টসের ৩ শ্রমিককে ফোনে ডেকে মারধর

রাজধানীর দক্ষিণখানে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন চৈতি গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা। আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন শ্রমিককে ফোনে কারখানার বাইরে ডেকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণখান থানাধীন চৈতি গার্মেন্টস-সংলগ্ন এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে মালিকপক্ষের শ্রমিক ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অংশ নেন বলে অভিযোগ আহত শ্রমিকদের।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন চৈতি গার্মেন্টসের কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান (৩২), ফিনিশিং আয়রনম্যান সবুজ মিয়া (২৮) ও বাচ্চু মিয়া (৩২)। আহতদের প্রথমে উদ্ধার করে দক্ষিণখানের একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে আবার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

আহত শ্রমিক কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল (রোববার) শ্রমিকদের বেতন শতকরা ৮ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে আমাদের গার্মেন্টসের প্রায় ২ হাজার শ্রমিক কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করেন। সেখানে গার্মেন্টসের মালিকপক্ষের শ্রমিকেরা নারী শ্রমিকদের গায়ে হাত দেন, সেই সঙ্গে তাঁদের গালমন্দ করেন। পরে আমরা প্রতিবাদ করি।’ 

হামলায় আহত শ্রমিকদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, ‘আজও ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মালিকপক্ষের শ্রমিক ১১ জন আজ কাজে যোগদান করেন নাই। পরে মেহেদী হাসান নামে এক বহিরাগত আমাদের ফোন দিয়ে গার্মেন্টসের সামনের মার্কেটের কাছে ডেকে নেন। সেখান থেকে হাজীপাড়ার ১০-১২ জন আমাদের তিনজনকে জোরপূর্বক আওয়ামী লীগ নেতা বকুলের ক্লাবে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে হাজি বিল্লাত আলী স্কুলের পাশে যাওয়ামাত্রই ১০-১২ জন লাঠিসোঁটা, রড নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে।’ 

অন্যদিকে চৈতি গার্মেন্টসের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শফিকুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১০-১২ জন শ্রমিক এমডি নিজে ঢুকাইছে। তারা ঠিকমতো কাজ করে না। এ ছাড়া তারা আমাদের শ্রমিকদের সঙ্গে মারামারি করে। আজ তারা কাজে না এসে শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। এতে বহিরাগত লোকজনও ছিল।’ 

আহত শ্রমিকদের সঙ্গে হাসপাতালে আসা শ্রমিকেরা বলেন, ‘একজন শ্রমিককে মালিকপক্ষ কাজে নেয়। সে কাজ করে না। ফ্লোরের পরিবেশ নষ্ট করছে। কাটিংয়ের শ্রমিকেরা তাকে বের করার জন্য কাজ বন্ধ রাখছে। অপরদিকে কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। আজ মালিকপক্ষের ১১ জন শ্রমিক না এসে বহিরাগত মাস্তান নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘হামলার নেতৃত্ব দেন ম্যানেজমেন্টের মোশারফ (৩০), শাহনাজ আক্তার বেলি (৪০), সাধারণ শ্রমিক আরিফ (৩০) ও মাসুদ (২৯)।’ 

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিকদের ওপর হামলার বিষয়টি শুনেছি। আহত শ্রমিকেরা হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁদের খোঁজখবর নিতে পুলিশ গিয়েছে। এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছুই জানতে পারিনি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত