Ajker Patrika

মাইকিং করে গ্রাহক খুঁজছে পল্লী বিদ্যুৎ

গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৪
Thumbnail image

টাঙ্গাইলের গোপালপুরসহ ১৭৪ উপজেলায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাইকিং করে বিদ্যুতের সংযোগ প্রত্যাশী গ্রাহক খুঁজে দ্রুত সংযোগ প্রদান করতে হবে। সরকারের এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গোপালপুরের প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করে জোরালো প্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর গোপালপুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মজিবুল হক।

জানা যায়, মুজিববর্ষে সবার জন্য নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎসুবিধা নিশ্চিত করতে শিগগিরই দেশের ১৭৪ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাঠ পর্যায়ের অফিসে সর্বশেষ ব্যবস্থা গ্রহণে গত রোববার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক খালেদা পারভীন স্বাক্ষরিত পত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সরেজমিন গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইলের হরিষা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অটোরিকশায় মাইক বেঁধে বিদ্যুতের সংযোগ পাননি এমন সংযোগপ্রত্যাশীদের সংযোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

গ্রামের ষাটোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, ডাক্তার রোগী দেখবেন, গরুর মাংস বিক্রি ইত্যাদির মাইকিং শুনেছি। কিন্তু এভাবে যে ঘরে ঘরে এসে মাইকিং করে বিদ্যুতের সংযোগ দেবে, এটা কল্পনা করতেও পারি না। এর আগে বিদ্যুতের সংযোগ নিতে পায়ের জুতা ক্ষয় হয়ে যেত আর এখন ফেরি করে বাড়িতে এসে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে যায়।

গোপালপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৩ দশমিক ৩৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গোপালপুর উপজেলায় এ পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির ৮০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে, যা দিয়ে উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১৫৮ গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে। উপজেলায় ১ হাজার ৭১৫ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করে ২০ এমভিএ উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি মাসে প্রায় ৪ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিক্রি হয়। বিল আদায়ের হার প্রায় ১০০ শতাংশ। সিস্টেম লস মাত্র ১০ শতাংশ।

গোপালপুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মজিবুল হক বলেন, গত দুই বছরে গোপালপুর উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে, যার ৪০ শতাংশ গ্রাহককে ভ্যানে করে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ নামে টিমের মাধ্যমে হয়রানিমুক্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ টিমের মাধ্যমে প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ সমাধান করা হয়েছে। দুর্নীতি ও গ্রাহকের হয়রানিমুক্ত বিদ্যুতের সেবা নিশ্চিত করতে অর্ধশতাধিক উঠান বৈঠক করা হয়।

বিদ্যুৎবিভ্রাট কমাতে বিদ্যুৎবিভ্রাট পর্যবেক্ষণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী টিম প্রতি রাতে ‘নাইট অপারেশন’ পরিচালনা করে যাচ্ছে।

উপমহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, গত নভেম্বর মাসে ১৫ জন অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গোপালপুরে বর্তমানে কোনো লোডশেডিং নেই। তবে এ উপজেলায় প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে জামালপুর গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাই বিদ্যুতের ফল্ট হলে তা খুঁজে পেতে সময় লেগে যায়। পাশের উপজেলা ঘাটাইলের পাকুটিয়ায় গ্রিড সাবস্টেশন নির্মাণাধীন রয়েছে, যা সম্পন্ন হলে এই গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া হবে। তখন লো-ভোল্টেজের সমস্যা ও বিদ্যুৎবিভ্রাট থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত