Ajker Patrika

তামাক নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টিকারী আইনগুলো সংস্কারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

পুরোনো যেসব আইন, নীতি ও অধ্যাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে সেগুলো সংস্কার করে যুগোপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সময়োপযোগী করা উচিত এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের রক্ষা কবচ হিসেবে পরিচিত এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে গাইডলাইন প্রণয়ন করাও অত্যন্ত জরুরি।’ 

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ এর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’। 

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে একটি অধিক তামাক ব্যবহারকারী জনগণের দেশ ‘‘বাংলাদেশ’’। সুতরাং জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। তামাক কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনার সময় এসেছে।’ 

মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক সাগুফতা সুলতানা প্রমুখ। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরীর বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং সার্বিক উন্নয়নে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো তামাক। এ কথা সর্ব মহলে স্বীকৃত। তামাক চাষাবাদ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবনসহ প্রতিটি ধাপেই পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ 

তামাক চাষের ফলে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাহাড়ের ধারে দীর্ঘদিন ধরে তামাক চাষের কারণে তামাকের নির্যাস ও চাষে ব্যবহৃত সার এবং রাসায়নিক মিশ্রিত পানি সরাসরি গিয়ে নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। তা ছাড়া দেশে ৩১% বন নিধনের ক্ষেত্রে তামাক চাষ দায়ী। এ জন্য তামাক চাষ ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তামাক চাষ সম্পূর্ণ বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।’ 

অরূপ রতন চৌধুরী আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, ১৯৭০ সাল থেকে তামাকের কারণে বিশ্বব্যাপী (গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে) আনুমানিক ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন হেক্টর বন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশ্বে বছরে ৩৫ লাখ হেক্টর জমি তামাক চাষে ধ্বংস হয়। প্রায় ৯০ ভাগ তামাক উৎপাদন হয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। 

সংবাদ সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণে কিছু সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি জমি ও পরিবেশ সুরক্ষায় দ্রুত তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি পাস করা, তামাক পাতা রপ্তানিতে ২৫% শুল্ক পুনরায় আরোপ করা, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে তামাক কোম্পানির ‘সিএসআর’ কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা, বিএটিবি থেকে সরকারের ৯.৪৯% শেয়ার এবং কর্মকর্তা প্রত্যাহার করা, প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ‘রোডম্যাপ’ চূড়ান্ত করা, ইত্যাদি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত