Ajker Patrika

‘ঢাবির শিক্ষার্থীরা মেরিট অনুযায়ী সিট পায়, বিবাহ স্ট্যাটাস দেখে নয়’

ঢাবি প্রতিনিধি
‘ঢাবির শিক্ষার্থীরা মেরিট অনুযায়ী সিট পায়, বিবাহ স্ট্যাটাস দেখে নয়’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বিবাহিত ছাত্রীদের থাকার যে বিধিনিষেধ এবং প্রচলিত যে নিয়ম, তা বাতিলের দাবি উঠেছে। আজ শুক্রবার ঢাবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান ছাত্রী হলের প্রতিনিধিরা। 

সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রী হল প্রতিনিধিরা চারটি দাবি তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর সিট বরাদ্দ দেওয়া হয় তাঁর মেরিট দেখে, তাঁদের বিবাহ স্ট্যাটাস দেখে নয়। সেই সঙ্গে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, বিবাহিত হওয়া অপরাধ কি না। 

সংবাদ সম্মেলনে ঢাবির পাঁচটি ছাত্রী হলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক সহসভাপতি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিশমা, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শারমিন, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক পাঠকক্ষ সম্পাদক অর্পিতা প্রমুখ। 

লিখিত বক্তব্যে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, ‘বিবাহিত হওয়া কি অপরাধ? আর বিবাহিত স্ট্যাটাসের সঙ্গে হলে থাকার সম্পর্ক বা থাকতে না দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা বা কারণ তাঁদের কাছে নেই। একজন ছাত্রী বিবাহিত না অবিবাহিত সেটা দেখে হলে সিট বরাদ্দ হয় না। সে মেরিট অনুযায়ী লিগ্যাল সিট পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একজন ছাত্র বা ছাত্রীর অধিকার হলে সিট পাওয়া।’ 

ইমি বলেন, ‘এই করোনায় অনেক ছাত্রছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তাঁরা কোথায় যাবে এখন? এত খরচ কোথা থেকে বহন করবেন ছাত্রীরা? একজন ছাত্রীর যদি বিবাহিত হয়ে হলে থাকা অপরাধ হয়, তাহলে আমাদের মতে হলের হাউস টিউটর এবং প্রভোস্টদের অবিবাহিত হতে হবে। বিবাহিত হলে তাঁরা হাউস টিউটর কোয়ার্টারে থাকতে পারবেন না। তাঁদের স্বামী তাঁদের কি দায়িত্ব নিতে পারেন না?’ তিনি বলেন, ‘হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কোনো ধরনের কথাই শুনতে চাইছে না হল প্রশাসন। অথচ পাঁচ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ছাত্রলীগের হল কমিটির নেতারা এখনো হলে থাকে। এসব দ্বিচারিতা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আমরা আর সহ্য করব না। দাবি আদায় না হলে। কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব আমরা।’ 

সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রীদের পক্ষ থেকে চারটি দাবি তুলে ধরেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। দাবিগুলো হলো—

১। বিবাহিত ছাত্রীদের হলে থাকার যে বিধিনিষেধ এবং তাঁদের জন্য প্রচলিত যে নিয়ম, তা বাতিল করতে হবে। 
২। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষার্থে সকল ছাত্রী হলে লোকাল গার্ডিয়ান বা স্থানীয় অভিভাবকের পরিবর্তে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট বা জরুরি যোগাযোগ শব্দটি রাখতে হবে। 
৩। আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 
৪। শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করতে হবে এবং জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের হলে অবস্থান করতে দিতে হবে। 

বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের এক শিক্ষার্থীর সিট কেটে দিয়েছে হল প্রশাসন। বিবাহিত হওয়ায় আরও কয়েকটি হলেও নারী শিক্ষার্থীদের সিট বাতিল করা হচ্ছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পাঁচটি হলে আসন বণ্টন সম্পর্কিত নীতিমালার একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়মভঙ্গের কারণে তাঁর সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত