Ajker Patrika

‘আমি বালু কাটমুই, দল করি সেখানে আবার অনুমতি কিসের’

ধনবাড়ী প্রতিনিধি
Thumbnail image

ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের বওলা গ্রামের বংশাই নদী থেকে ‘বাংলা ড্রেজার’ মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দিনের বেলায় বন্ধ থাকলেও রাতের বেলায় চালু থাকছে ড্রেজার। রাজনৈতিক দাপটে এ কর্মযজ্ঞ চলছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, ব্রিজ, রাস্তা-ঘাট।

বালু উত্তোলনকারী বওলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে গিয়াস উদ্দিন। তবে বিষয়টি এখনো প্রশাসনের নজরে আসেনি। 

ভুক্তভোগীরা জানান, বালু উত্তোলনে কেউ প্রতিবাদ করলে দেখানো হয় রাজনৈতিক দাপট। বছর জুড়েই এ নদীতে গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে চলে বালু উত্তোলন। চেয়ারম্যানের কাছের লোক হওয়ায় পদ-পদবি না থাকলেও আছে তাঁর দাপট। এলাকাবাসীর ভয়, আসন্ন বর্ষায় নদীতে এলেই দেখা দেবে তীব্র ভাঙন। 

সরেজমিনে বওলা গ্রামের বংশাই নদীতে গিয়ে দেখা যায়, নদীর ওপর পাড়ে জামালপুর জেলা সীমান্ত ঘেঁষা যদুনাথপুর। দুপাশের যোগাযোগের জন্য নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে ব্রিজ। ব্রিজের উত্তর পাশের পিলারের কাছ থেকে বাংলা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাইপ দিয়ে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দূরে। আর এভাবে, বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমির মাটি ভেঙে পড়ছে নদীতে। ভারী যানবাহন উঠলে কাঁপছে ব্রিজ। বিগত বছরে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের ফসলি জমিও চলে গেছে নদী গর্ভে। পাশের রাস্তা জামালপুর-নান্দিনা মহাসড়কেও দেখা দিয়েছে ভাঙন। 

ভুক্তভোগী সেলিম হোসেন, আব্দুল মালেক আয়ূব আলীসহ অনেকেই জানান, ‘বছরজুড়ে নানা কায়দায় মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে গিয়াস। এবার আমাদের জমির পাশে বালু উত্তোলন করছে। দিনের বেলায় বন্ধ থাকলেও রাতে চলে পুরো দমে। এলাকাবাসী না করলেও মানে না। ফসলি জমি এখনে ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। গিয়াস বালুর ব্যবসা করেন। চুক্তিতে এখান থেকে বালু দেয়। কিছু বললে দলের দাপট দেখায়। আমরা কৃষি কাজ করে খাই। এভাবেই নদীতে জমি চলে গেলে অনেক ক্ষতি হবে। এ জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করি।’ 

অপর বাসিন্দা মকবুল হোসেন ও মো. হারুন আর রশীদ বলেন, ‘প্রতি বছরই গিয়াস তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী বালু উত্তোলন করে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়নাল বলেন, ‘প্রতি বছরই গিয়াস নদী থেকে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। কাউকে মানে না। দলের ক্ষমতা দেখায়। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করি।’ 

গিয়াস উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীর ভেতর আমার জমি। তাই নদীর জমি আমার। আমি তো বালু কাটমুই, বালুর ব্যবসা করি। অনুমতি কিসের? ইউএনও-এর কাছ থেকে আমার কোনো অনুমতি লাগে না বালু কাটতে। আমরা দল করি সেখানে আবার অনুমতি কিসের?’ 

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসলাম হোসাইন বলেন, ‘বালু উত্তোলন বিষয়ে আমাদের জানা নেই। যদি সে বালু উত্তোলন করে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বালু উত্তোলন বন্ধ করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত