Ajker Patrika

ডেডিকেটেড হাসপাতালেই এডিস মশার ‘আস্তানা’

সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
ডেডিকেটেড হাসপাতালেই এডিস মশার ‘আস্তানা’

হাসপাতালটির চারপাশে সবুজ গাছগাছালি। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে আঙিনায়। জায়গায় জায়গায় পড়ে আছে প্লাস্টিকের গ্লাস ও চিপসের প্যাকেটসহ নানা পরিত্যক্ত জিনিস। এমন স্যাঁতসেঁতে জায়গা ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ পরিবেশ। কমলাপুরে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার এমন চিত্রই দেখা যায়।

ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে এটিসহ রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালকে গত সোমবার ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাইরের এমন পরিবেশের পাশাপাশি রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঘোষণা এখনো কার্যকর করা হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তি করা হয়নি কোনো রোগীও। আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে আগেই সরকারি সাহায্যে সব ধরনের সমস্যা শিগগির সমাধান করার আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

মঙ্গলবার হাসপাতালটিতে ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ ডাক্তারের রুমেই তালা ঝুলছে। অলস সময় কাটাচ্ছেন হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পুরো হাসপাতালে ১৫ জনের বেশি কর্মচারীর দেখা পাওয়া যায়নি। কিছুদিন আগ পর্যন্ত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল থাকার কারণে এদিন কিছু রোগীর আনাগোনা ছিল। তবে গত কয়েক দিনে শুধু রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়া সাধারণ রোগীরা খুব আসেন না বলে জানালেন দায়িত্বরতরা।

হাসপাতালটির ৭০টি বেড ও ১০টি কেবিনে রোগী ভর্তি আছেন মাত্র তিনজন। ভর্তি থাকা রোগীদের সবাই রেলওয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানালেন আন্তবিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক রিংকু চক্রবর্তী। তিনি জানান, রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা এবং বিনা মূল্যে ওষুধ সেবার কারণেই তাঁরা এখানে বেশি আসেন। হাসপাতালে তিন রোগীর দুজন গতকাল অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে যান বলে জানা গেছে। তা ছাড়া হাসপাতালটিতে কোনো নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) নেই। অপারেশন থিয়েটারে বিকল হয়ে আছে প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রপাতি। প্যাথলজি বিভাগে নেই মাইক্রোস্কোপ। বহিঃবিভাগে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা চালু থাকলেও আন্তবিভাগে রয়েছে লোকবলের সংকট।

সংকট নিয়ে আক্ষেপ জানিয়ে হাসপাতালটির অতিরিক্ত বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা তুহিন বিনতে হালিম বলেন, ‘সাধারণ রোগীদের সেবা দিতে আমাদের আরও অনেক বেশি লোকবল দরকার। চিকিৎসক দরকার, রোস্টার ডিউটি করার জন্য অতিরিক্ত ডাক্তার দরকার, ডেঙ্গু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দরকার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।’

হাসপাতালটির বহিঃবিভাগে প্রাথমিকভাবে রোগীদের সেবা দেওয়া গেলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। তুহিন বিনতে হালিম বলেন, ‘এখানে বিশেষজ্ঞ কোনো ডাক্তার নেই। ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য গাইনি, শিশু ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। কিন্তু এসব বিশেষজ্ঞের কোনোটাই নেই এখানে। এক্স-রেসহ বিভিন্ন মেশিন বেশ পুরোনো হয়ে গেছে। নতুন ডিজিটাল মেশিন নেই। ভালোভাবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য এসব জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন।’

চিকিৎসা কর্মকর্তা হালিম আরও জানান, একজন অর্থোপেডিকস ও গাইনি ডাক্তার এবং আরও দুজন মিলে বহিঃবিভাগে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। সব সমস্যা সমাধানে তিনি সরকারের সহযোগিতা চান। 
হাসপাতালের যেসব জায়গায় পানি জমে থাকে, সেসব জায়গা প্রতিদিন পরিষ্কার করা হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত