Ajker Patrika

মাঝ পদ্মায় দুই ফেরির সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৫: ৪৬
Thumbnail image

পদ্মা নদীতে দুই ফেরির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন ১ পিকআপ চালক। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরার পাইনপারা চ্যানেলের মুখে বেগম সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া ফেরির মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 
 
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে  মাঝিরঘাট থেকে সুফিয়া কামাল ফেরি পাইনপারা চ্যানেলের মুখে টার্নিং নেওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বেগম রোকেয়া ফেরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিতে দাঁড়িয়ে থাকা খোকন শিকদার ফেরির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে গাড়ির চাপায় নিহত হন। নিহত খোকন শিকদার ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার হারুন শিকদারের ছেলে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিসি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া ফেরিতে থাকা শামীম মোল্লা নামের এক পিকআপচালক নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন পিকআপের মালিক ও স্বজনেরা। দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ, চালকের অসাবধানতা এবং গাফিলতির কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুই ফেরির সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উভয় ফেরির অন্তত ৮টি যানবাহন। 

দুর্ঘটনায় পিকাপচালকের নিখোঁজের সংবাদের খবর পেয়ে শরীয়তপুরের মাঝিরঘাটে ছুটে এসেছেন পিকআপের মালিক মো. হাবিবুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত ১২টার দিকে বাসা বদলের মালামাল নিয়ে ফরিদপুর যাচ্ছিলেন মো. শামীম মোল্লা। দিবাগত রাত ৩টায় ফেরি দুর্ঘটনার পর তাঁকে খুঁজে পাচ্ছি না। তাঁর পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তাঁর সন্ধান পেতে সরকারের কাছে দাবি জানাই।’ 

নৌপথে ঢাকা থেকে খুলনা পুলিশ লাইনে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত মাইক্রোবাস চালক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘গাড়িতে বিশ্রামরত অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মুহূর্তের মধ্যেই আমার গাড়িটি পাশের গাড়ির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। গাড়িতে থাকা একজন যাত্রী আহত হয়েছেন। আমার গাড়িটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এখন মালিককে কি জবাব দেব? আমাদের ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’ 

বেগম রোকেয়া ফেরিতে থাকা যাত্রী আমির হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় ফেরির সকল লাইট বন্ধ ছিল। দুই ফেরি মুখোমুখি হলেও কোনো ফেরিই সাইরেন বাজায়নি। বেগম রোকেয়া ফেরি এ সময় নদীতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভাসতেছিল। সম্ভবত ফেরির চালক ঘুমাচ্ছিলেন।’ 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) জামাল হোসেন জানান, বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিটি মাঝিরকান্দি থেকে শিমুলিয়া আসছিল আর বেগম রোকেয়া ফেরিটি শিমুলিয়া থেকে মাঝিরকান্দি যাচ্ছিল। জাজিরায় পদ্মা নদীর টার্নিং পয়েন্টে দুই ফেরির সংঘর্ষ হয়। সে সময় বেগম সুফিয়া কামাল ফেরিতে দাঁড়িয়ে থাকা হারুন একটি গাড়ির চাপায় নিহত হন। দুই ফেরিতে থাকা কিছু যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ সংঘর্ষ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিসি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত