Ajker Patrika

দ্বিতীয় বৈঠকেও হাফ পাস নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৩০
দ্বিতীয় বৈঠকেও হাফ পাস নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো নিষ্ফল বৈঠক করেছে পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন ও বিআরটিএর প্রতিনিধিগণ। শনিবার দুপুর ১২টায় বনানীর বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়ে ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ২ ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রতিনিধিগণ জানান, বিষয়টি নিয়ে সবাই আন্তরিক অবস্থানে রয়েছেন, তবে এটি সমাধানে আরও কিছুদিন সময় প্রয়োজন।

বৈঠক শেষে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, 'গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এ বিষয়ে সরকার খুবই আন্তরিক। পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন, পুলিশের কর্মকর্তাগণসহ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। গত ২৫ নভেম্বর সিদ্ধান্ত হয়েছিল আমরা আবারও বসব। দুই দিনের মধ্যেই বসেছি। খুঁটিনাটি আলোচনা হয়েছে। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।'

মালিক সমিতির প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছাত্রসংখ্যা বেশি হলে ভর্তুকির পরিমাণ কী হবে, তা-ও আলোচনায় এসেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। আলাদা পরিচয়পত্র দেওয়া হবে কি না। এসব কিছু নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মালিক সমিতিসহ সবাইকে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু সরকার বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক, সেহেতু এটার দ্রুত সমাধান হবে। ছাত্ররা আমাদের সন্তানতুল্য। সরকার ছাত্রদের এই দাবি আমলে নিয়েছে। কিন্তু আরও কিছুটা সময় লাগবে।' 

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, 'আমরা লক্ষ করছি, বাসে হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সিনিয়র সিটিজেনসহ আরও অনেক সংগঠন দাবি জানিয়েছে। ছাত্রদের এই দাবি যৌক্তিকভাবে সমাধান করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ঢাকায় যেসব বাস চলাচল করে, তার ৮০ ভাগ গরিব মালিক। ঢাকা শহরে লাখ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। হাফ ভাড়া কখনোই আইন ছিল না। এইটা কখনো নিত, কখনো ঝগড়াঝাঁটি হতো। ছাত্রদের জন্য সরকারিভাবে হাফ পাসের বিষয়টি আইন করা হলে অনেকগুলো বিষয় সামনে আসবে। কারা হাফ পাস পাবে, তাঁদের কার্ড কীভাবে হবে। যে দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স জাল হয়। সেখানে হাফ পাসের ঘোষণা এলে অনেকের কাছেই এই কার্ড থাকবে। সেগুলোও ভাবতে হবে।' 

তিনি বলেন, 'বিআরটিএর আহ্বানে আমরা কিছু প্রস্তাব রেখেছি। এই প্রস্তাবগুলোর সমাধান হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোতে হাজার হাজার টাকা টিউশন ফি, সেগুলো কমানো যেতে পারে। বিআরটিসির গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে।' শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব বাস বাড়ানোরও আহ্বান জানান তিনি। 

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের নির্বাচন ছিল, সেটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তবু বিষয়টি নিয়ে আমরা ভেবেছি। হাফ ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনো মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হন, তবে তাঁকে কীভাবে সহযোগিতা করা হবে? তার ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেওয়া হবে বা প্রণোদনা দেওয়া হবে কি না, তা নির্ধারণ করতে হবে। সবার সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।' এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের গাড়ি ভাঙচুর, লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া থেকে বিরত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত যেতে অনুরোধ জানান। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এটা একটা নতুন প্রস্তাব, এটা সহজ নয়। অনেকগুলো মন্ত্রণালয় যুক্ত আছে। সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত একবারেই হবে। সবাইকে নিয়ে করতে হবে।' 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, 'রাস্তায় মার খাচ্ছে শ্রমিকেরা। রাষ্ট্রকে শ্রমিক, ছাত্র, মালিক সবার দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের শ্রমিকেদের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র আমাদের কোনো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে না। এটির দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত