Ajker Patrika

অশিক্ষিত রাজ্জাক মেজর পরিচয়ে শিক্ষিত নারীদের ফাঁদে ফেলে করতেন টাকা আত্মসাৎ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অশিক্ষিত রাজ্জাক মেজর পরিচয়ে শিক্ষিত নারীদের ফাঁদে ফেলে করতেন টাকা আত্মসাৎ 

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার খাইরুল ইসলামের ছেলে আবদুর রাজ্জাক। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পেশার নারীদের টার্গেট করতেন। এরপর তাদের সঙ্গে পরিচয় গড়ে তুলে সেনাবাহিনীর মেডিকেলের নার্সসহ বিভিন্ন বেসামরিক পদে চাকরির প্রস্তাব দিতেন। তার ফাঁদে পা দিলে কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন। এভাবে শত শত নারীদের সঙ্গে প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছে র‍্যাব।

আজ শনিবার টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার বেতডোবা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবদুর রাজ্জাক ওরফে মেজর সাগর চৌধুরীকে (৩১) গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১০।

এ সময় তার কাছ থেকে এক সেট করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কম্ব্যাট ইউনিফর্ম, কাধব্যাগ, নেমপ্লেট, ফেস মাস্ক, ফিল্ড ক্যাপ, মিলযুক্ত মানিব্যাগ, লাইসেন্স এবং পাঁচটি ভুয়া নিয়োগপত্র, মেডিকেল সনদপত্র, পাঁচটি ভুয়া এনআইডি কার্ড, চারটি মোবাইল ফোন ও ১১টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে র‍্যাব-১০। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যেভাবে প্রতারণা করতেন রাজ্জাক 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে বগুড়ার মাঝিরা সেনানিবাসের মেজর বলে পরিচয় দিতেন। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে বিশ্বাস অর্জনের জন্য সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় কথা বলতেন। এক নারীর সঙ্গে আলাপের একপর্যায়ে বগুড়া সিএমএইচে নার্সের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখান।

এরপর কৌশলে তাঁর কাছ থেকে ৪–৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এভাবে কামরাঙ্গীরচরের পাঁচ ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে সবাই অনেক চেষ্টা করেও সাগরের আর কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে না পেরে কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক আরও বলেন, গ্রেপ্তার আবদুর রাজ্জাক অসংখ্য সিম কার্ড ব্যবহার করতেন। পাশাপাশি ফেসবুকে পরিচয় হওয়া নারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির আইডি কার্ড ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্ট খুলতেন। প্রতারণার টাকা পরিবহন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতেন।

কোনো ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষিত নারীদের ফাঁদে ফেলতেন। এভাবে তিনি চারজন নারীকে বিয়ে করেছেন। ভিন্নধর্মী এক নারীকে বিয়ের চেষ্টাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় আরও একটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত