Ajker Patrika

স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে মুছে দিতেই পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে মুছে দিতেই পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার আইসিটি টাওয়ারের অডিটোরিয়ামে এই আয়োজন করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁও এর আইসিটি বিভাগের পক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বৈষম্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদের অনুপ্রেরণায় গত ১৩ বছরে প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শহর-গ্রাম, ধনী-দরিদ্রদের মধ্যে কিছুটা হলেও বৈষম্য দূর করা সম্ভব হয়েছে। নারী-পুরুষের বিভেদ, বৈষম্য দূর করার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’ 

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৭১ এর পরাজিত অপশক্তি পরাজয়ের গ্লানির প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই ঘাতকচক্র শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের, এমনকি ১০ বছরের নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছে। কারণ তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানেও যেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ তাঁর আদর্শকে ধরে রাখতে না পারে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরি ও অনুসারী কেউ যেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা লালন করতে না পারে তার জন্য এ হত্যাকাণ্ড।’ 

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘কেন ঘটেছিল বঙ্গবন্ধু-হত্যা, সেটা বোঝার জন্য হত্যাকাণ্ড-পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনাধারার দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তথা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় বিরোধী দক্ষিণপন্থী শক্তি ও ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা-গোষ্ঠী। অস্ত্রধারী ঘাতক গোষ্ঠী যখন মেজর জেনারেল খালেদ মোশররফের পাল্টা-অভ্যুত্থানে কিছুটা বেসামাল অবস্থায় পড়েছিল, তখন কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে দেশত্যাগ করে এবং পাকিস্তানের যোগসাজশে আশ্রয় পায় লিবিয়ায়, মুয়াম্মার গাদ্দাফির তথাকথিত ইসলামি বিপ্লব বা সবুজ বিপ্লবের দেশে।’ 

এর আগে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হতে পাঠ, ১৫ আগস্টে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অবদান, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র দর্শন ও সোনার বাংলা বিনির্মাণে পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে যায়। সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা উঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও শক্তির উত্থান ঘটে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তারা অধিষ্ঠিত হয়। 

আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আইসিটি বিভাগ ও এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। আইসিটি বিভাগের সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত