Ajker Patrika

নারী-পুরুষের লাইন আছে, হিজড়াদের লাইন কোথায়? 

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
নারী-পুরুষের লাইন আছে, হিজড়াদের লাইন কোথায়? 

‘আমাকে লাইন থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। নারী ও পুরুষের লাইন আছে, তাহলে হিজড়াদের লাইন কোথায়? আমরা সিরিয়ালে দাঁড়াতে পারি না, আশপাশের মানুষ কটু কথা শোনায়। অনেক সময় সেবা না নিয়েই ফিরে যাই।’ এভাবে সাভারে এক সভায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি পূর্ণিমা।

আজ রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেমিনার হলে আয়োজিত হিজড়া ও লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সেবা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। বন্ধু সোশ্যাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির সহযোগী সুস্থ জীবনের আয়োজনে এ সভা হয়।

এ সময় পূর্ণিমা বলেন, ‘আমাদেরও লাইন থাকতে হবে না হলে আমাদের সবার আগে সেবা দিতে হবে। যেহেতু আমাদের সিরিয়াল নেই।’ 

এ সময় সুস্থ জীবনের ডিআইসি ম্যানেজার আহাদ আলী দেওয়ান তাদের বর্তমান কার্যক্রম সকলের সামনে তুলে ধরেন। সূর্যের হাসি ক্লিনিক, ব্র‍্যাকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ সভায় অংশ নেন। 

সাভারের তৃতীয় লিঙ্গের গুরুমা শাপলা বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গদের কেউ মানুষ বলে মনে করে না। আমরাও তো মায়ের পেট থেকে হয়েছি। আমাদেরও তো বাবা নামে কেউ আছ, তবুও কিছু নেই। সাভারের কেউ আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। কতজনে ঘর পায়, কতজনে বাড়ি পায় কিন্তু আমরা তো কিছু পাইনি।’ 

সাভার উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমিন চৌধুরী সুমি বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মৌলিক চাহিদাগুলো আমরা সম্মিলিতভাবে পূরণ করতে পারি। তাহলে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজের উন্নয়নে অংশ নিতে পারব।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সাভারের আমিন বাজারের ২০ শয্যা হাসপাতালে একটি কক্ষে সব সময় তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের সেবা দেওয়া হয়। সেখানে কোনো সিরিয়াল ছাড়াই তারা সেবা নিতে পারছেন। আমাদের জায়গা থেকে সব সময় সচেষ্ট আছি।’ 

উপস্থিত বক্তা সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ সরকার তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করছে। সমাজে তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। 

ওসি আরও বলেন, হিজড়া সন্তান জন্ম নিলে সে যেন পরিবারে থেকে বা সমাজে থেকে বেড়ে ওঠে এর খেয়াল রাখতে হবে। তাঁকে যেন আলাদা করে না দেওয়া হয়। সমাজ যেমন তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের গ্রহণ করার চেষ্টা করছে তাঁদেরও এগিয়ে আসতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত