Ajker Patrika

নারীর ঘামে সচল সিরাজদিখানের কৃষিকাজ

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ)
আগাছা পরিষ্কারে কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। তাঁরা কাজে দক্ষ হওয়ার পরেও মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগাছা পরিষ্কারে কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। তাঁরা কাজে দক্ষ হওয়ার পরেও মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বোনা আমন ধানের জমিতে আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। উপজেলায় দিনে দিনে বাড়ছে কৃষিকাজে তাঁদের অংশগ্রহণ। স্থানীয় শ্রমিকসংকটে কৃষকেরা এখন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নারী শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করছেন।

গত রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের বাহেরকুচি গ্রামের কয়েকটি কৃষিজমি ঘুরে দেখা যায়, তীব্র রোদ, হালকা বৃষ্টি আর পানিশূন্য জমির ভেতরেও কাজ থেমে নেই। আগাছা পরিষ্কারে ব্যস্ত নারী শ্রমিকেরা কেউ কাঁচি হাতে, কেউ হাতের মুঠোয় তুলে নিচ্ছেন আগাছা। তাঁদের পরিশ্রমেই সচল হয়ে উঠেছে এলাকার কৃষিকাজ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধানের চাষ হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি। এসব জমির পরিচর্যায় স্থানীয় শ্রমিক কম পাওয়ায় বাইরে থেকে নারী শ্রমিক এনে কাজ করানো হচ্ছে।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম, রংপুর, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, গাইবান্ধা, বরিশাল, ভোলা, জামালপুর ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে আগত নারী শ্রমিকেরা প্রতিদিন ভোর থেকে মাঠে কাজ করছেন। তবে এখানেও রয়ে গেছে মজুরির বৈষম্য। একজন পুরুষ শ্রমিক যেখানে দৈনিক ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পান, সেখানে নারী শ্রমিকেরা পাচ্ছেন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

গাইবান্ধা থেকে আসা শ্রমিক শাহানা খাতুন বলেন, ‘মজুরি কম হলেও এ কাজেই সংসার চলে। পুরুষদের মতো আমরাও মাঠে ঘাম ঝরাই, আমাদের পরিশ্রমেও সম্মান থাকা উচিত।’

কুড়িগ্রাম থেকে আসা আরেক নারী শ্রমিক সালমা বেগম বলেন, ‘জমিতে পানি না থাকলে আগাছা তোলা খুব কষ্টের। কিন্তু উপায় কী—এ কাজ করেই তো সংসার চলে।’

আগাছা পরিষ্কারে কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। তাঁরা কাজে দক্ষ হওয়ার পরেও মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগাছা পরিষ্কারে কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। তাঁরা কাজে দক্ষ হওয়ার পরেও মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকসংকটে বাইরের জেলা থেকে নারী শ্রমিক আনতে হচ্ছে। তাঁরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন, দক্ষও। আমাদের ধানগাছগুলো টিকে আছে মূলত তাঁদের পরিশ্রমেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, ‘শ্রমিকসংকটের কারণে বাইরের জেলা থেকে নারী শ্রমিক এনে কৃষিকাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে। আগাছা নিয়ন্ত্রণে তাঁরা দক্ষ। যদিও মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে, তবু কৃষি উৎপাদনে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ: বরখাস্তের দণ্ড বদলে বাধ্যতামূলক অবসর

ভারত যে পারমাণবিক বোমা ফেলেনি, পাকিস্তানের বুঝতে সময় লেগেছে ৩০-৪৫ সেকেন্ড

‘ভিআইপি রুম না পেয়ে’ হোটেল বারে ভাঙচুর, যুবদলের পদ হারালেন মনির হোসেন

বিএনপি নেতার ছেলের নেতৃত্বে হামলার ৩৫ দিন পর মৃত্যু, লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

ফরিদপুরে এ কে আজাদের বাড়ির সামনে বিএনপির মিছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত