Ajker Patrika

চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মে ২০২৩, ০০: ১৮
চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করতে গিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। 

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলা সদরের পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও চৌদ্দগ্রাম আসনের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের বাড়িতে গত শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে গত শনিবার দুপুরে উপজেলা জামায়াতের নেতা-কর্মীরা চৌদ্দগ্রাম বাজারে একটি ঝটিকা মিছিল করে। তার কিছুক্ষণ পরে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারীরা বাজারে তাঁর কার্যালয়ের সামনে থেকে জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আরেকটি পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। 

একই দিন রাতে পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে তার বাড়িতে একটি প্রতিবাদ সভা করে। সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পৌর এলাকার চৌদ্দগ্রাম বাজারে পৌঁছালে সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মেয়র মিজান ও উপজেলা এবং পৌর আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন। 

সাবেক মেয়র মিজানের দাবি, জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের হলে স্থানীয় এমপির অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় তাদের হামলায় মেয়র মিজান গ্রুপের ১৫ সমর্থক আহত হয় বলেও দাবি করেন তিনি। 

অপরদিকে সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারী দাবি করেন, মেয়র মিজান জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে পূর্ব পরিকল্পনা করে বিক্ষোভের নাম করে তাদের (আ. লীগের) ওপর হামলা করে। রাত সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া সংঘর্ষে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। এ সময় মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীতসাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে আমার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ সভা শেষে চৌদ্দগ্রাম বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় মহাসড়কে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে এমপি মুজিবুল হকের অনুসারীরা আমাদেরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ, লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে।’

পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা তাদের ওপর কোনো হামলা করি নাই। তারা (মেয়র মিজান গ্রুপ) বিক্ষোভ মিছিলের নামে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এরই সূত্র ধরে সংঘর্ষটি পরে পুরো এলাকায় ছড়িতে পড়ে।’ 

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, ‘শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ 

এদিকে জামায়াত-শিবিরের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধের আজ রোববার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এমপি মুজিবুল হকের স্থানীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আক্তার হোসেন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রহমত উল্লাহ বাবুল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবিএম বাহার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল আলম মোল্লাসহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ বাবুল বলেন, ‘মেয়র মিজান জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য কিছু অসাধু ব্যক্তিদের নিয়ে শান্তির চৌদ্দগ্রামকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি মেয়র মিজানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মেয়াদের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পরিকল্পনা সরকারের

ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের সংলাপ ‘বয়কট’ করল জামায়াত

নারীর সঙ্গে এনসিপি নেতা তুষারের কথোপকথন ফাঁস নিয়ে যা বললেন সহযোদ্ধা ইমি

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন পরিবর্তন করায় জাতিসংঘের উদ্বেগ

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব নয়, স্বীকার করল ইসরায়েল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত