Ajker Patrika

চসিকের পিডির ওপর হামলা: ৪ ঠিকাদার কারাগারে, তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চসিকের পিডির ওপর হামলা: ৪ ঠিকাদার কারাগারে, তদন্ত কমিটি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলার ঘটনায় চার ঠিকাদারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে চসিক। আজ সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তারকৃত ঠিকাদরদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালত।

এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চসিক। এতে চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন—সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তা মনীষা মহাজন ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির। তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চায় খুলশী থানা-পুলিশ। কিন্তু বিচারক আবেদনে সাড়া দেননি না দিয়ে আদালতে পাঠান। তবে আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুনুর রশিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে এই ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান নগরের খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা।

মামলার আসামিরা হলেন—নগরের চকবাজার এলাকার এস. জে ট্রেডার্সের সাহাবউদ্দিন (৪৫), নন্দনকানন এলাকার শাহ আমানত ট্রেডার্সের সঞ্জয় ভৌমিক ওরফে কংকন (৪৬), মিয়াখান নগর এলাকার মাসুদ এন্টারপ্রাইজের মো. ফেরদৌস (৪৮), নন্দনকানন এলাকার শাহ আমানত ট্রেডার্সের সুভাষ মজুমদার (৪৬), দেওয়ান বাজার এলাকার খান করপোরেশনের হাবিব উল্লাহ খান (৪৮), জুবিলী রোড় এলাকার মেসার্স নাজিম এন্ড ব্রার্দাসের নাজিম (৪৬), আন্দরকিল্লা এলাকার মেসার্স রাকিব এন্টারপ্রাইজের নাজমুল হাসান ফিরোজ (৫০), ফরহাদ (৫০), চানমারি রোড এলাকার ইফতেখার এন্ড ব্রাদার্সের ইউসুফ (৫০) ও জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের আশিষ বাবু (৫০)। অভিযুক্তদের সবাই ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সঞ্জয় ভৌমিক ওরফে কংকন, সুভাষ মজুমদার, নাজমুল হাসান ফিরোজ ও মাহমুদ উল্লাহ।

গতকাল রোববার বেলা ৪টার দিকে নগরের খুলশী থানার টাইগারপাস এলাকায় চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে একদল ঠিকাদারের নেতৃত্বে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) গোলাম ইয়াজদানীর ওপর হামলা চালানো হয়। এ দিন অভিযুক্তরা চসিকের চতুর্থ তলার প্রকল্প পরিচালকের অফিস ৪১০ নম্বর কক্ষ ভাঙচুর করেন। এ সময় তাঁরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গোলাম ইয়াজদানীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাতে চসিকের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলার এজাহারের উল্লেখ করা হয়, ঠিকাদাররা প্রথমে পিডির রুমে জোর করে ঢুকতে চাইলে অফিস সহায়ক তিলক বলেন—স্যার ভাত খাবেন। কিন্তু ঠিকাদাররা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে অফিসে প্রবেশ করেন। ঠিকাদাররা প্রথমে পিডির সামনে বসে বিভিন্নভাবে তাঁকে কটাক্ষ করেন। এ সময় তাঁদের (আসামিদের) বাইরে কেউ টেন্ডার পেলে পিডিকে প্রাণে মারার হুমকি দেন। পিডির সঙ্গে কথাবার্তার একপর্যায়ে হঠাৎ কংকন, ফেরদৌস, সুভাষ ও আলমগীর পিডির শার্টের কলার ধরে টেনে ঘুষি মারেন। পিডির শার্ট টেনে ছিঁড়ে ফেলে এবং প্যান্টের বেল্ট খুলে ফেলেন। এ সময় সাহাবুদ্দিন তাঁর তাঁর কাছে থাকা রড বের করে পিডির মাথায় আঘাত করেন। এ সময় তিলক আটকে দেন। তারপর সাহাবুদ্দিন ওই লোহার রড দিয়ে টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলেন। কন্ট্রাক্টর হাবিব পিয়ন শফিককে মারধর করেন এবং পিডির নেমপ্লেট ভেঙে ফেলেন। 

মামলার বাদী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘হামলার ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ক্যামেরার ফুটেজ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।’

এই বিষয়ে খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলার ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। আমরা চার ঠিকাদারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থাপন করেছি। নতুন করে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত