Ajker Patrika

জ্বরের ওষুধ সেবনে ২ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ৩ তদন্ত কমিটি

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ১২: ৩৭
জ্বরের ওষুধ সেবনে ২ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ৩ তদন্ত কমিটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর ঘটনা খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন বিভাগ থেকে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলায় নাপা সিরাপ বিক্রি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। আজ শনিবার (১২ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ তিন কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরই মধ্যে কমিটিগুলো কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের কমিটি ৪৮ ঘণ্টা এবং অন্য কমিটিগুলোকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূপুর সাহাকে প্রধান করে এবং হাসপাতালের এমওডিসি ডা. হাবিবুর রহমান ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সাহেদ মিয়াকে সদস্য করে একটি পরিদর্শন টিম গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে এই কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের কাজ শুরু করেছেন। 

এ ছাড়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. আকতার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রানা নুরুস সামস ও মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. মাজহারুল ইসলাম সোহেল। এই কমিটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের কোনো গাফিলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন। 

সিভিল সার্জন জানান, তিনটি কমিটি বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে তা নিয়ে কাজ করবে। আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূপুর সাহাসহ সব কমিটি কাজ শুরু করেছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে এরই মধ্যে বাচ্চাদের খাওয়ানো সিরাপসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে জেলায় নাপা সিরাপ বিক্রি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। এ বিষয়ে জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউছার বলেন, আশুগঞ্জে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আপাতত নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। নাপার বদলে অন্য ওষুধ দিয়েও কাজ চালানো সম্ভব। যদি কোনো শিশুর ক্ষতি হয়, সেই চিন্তা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই মুরসালিন ও ইয়াসিনের জ্বর আসে। পরে সন্ধ্যায় তাদের বাবা ইসমাইল হোসেন স্থানীয় দুর্গাপুর বাজারের মা ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ কিনে নিয়ে আসেন। রাত ৮টা বাজে ইয়াসিন ও মুরসালিনকে একই বোতল থেকে সিরাপ খাওয়ানো হয়। সিরাপ খাওয়ানোর পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুজনের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়িতে ফেরার পথে প্রথমে মুরসালিন ও কিছুক্ষণ পর ইয়াসিন মারা যায়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত