Ajker Patrika

সোনালি সেই দ্বীপে এখন ছিনতাইয়ের ভয়

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
সেন্টমার্টিন। ফাইল ছবি
সেন্টমার্টিন। ফাইল ছবি

দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে একসময় মানুষ নির্ভয়ে চলাফেরা করত। দরজা খোলা রেখে ঘুমাত স্থানীয় বাসিন্দারা। ছিল না চুরি বা ছিনতাইয়ের আতঙ্ক। কিন্তু সময় বদলেছে। পর্যটন বন্ধ ও কর্মসংস্থান হারিয়ে দ্বীপে এখন চরম আর্থসামাজিক সংকট। সেই সঙ্গে বেড়েছে অপরাধ। ২৭ জুন সেখানে ঘটেছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। সেই সঙ্গে পরপর কয়েকটি চুরির ঘটনাও ঘটেছে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মাসের জন্য সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তে দ্বীপের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। কারণ, এখানকার প্রায় সবকিছুই পর্যটননির্ভর। হোটেল-রেস্তোরাঁ, নৌযান, যানবাহন, দোকানপাট—সবই থমকে গেছে। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বাসিন্দারা।

দ্বীপের বাসিন্দা মো. আবদুল মতলব, সিদ্দিক আহমদ ও মো. ইসহাক বলেন, বর্ষাকালে সাগর উত্তাল হওয়ায় টেকনাফের সঙ্গে নৌযোগাযোগ মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির কারণে নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা। এতে করে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং দাম বেড়ে যায়।

তাঁদের দাবি, পর্যটকদের জন্য পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, স্থানীয় মানুষের জন্য বিকল্প আয়ের পথ খুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে দ্বীপে পর্যাপ্ত খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রথমবারের মতো ছিনতাই

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আলম জানান, ২৭ জুন রাত ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে ডেইলপাড়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় বোরকা পরা তিনজন তাঁর পথ রোধ করে। তারা তাঁর কাছ থেকে ২-৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। রাতের অন্ধকারে ছিনতাইকারীদের চেনা সম্ভব হয়নি, তাই কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘আড়াই শ বছরের মধ্যে দ্বীপে এই প্রথম ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এটা অকল্পনীয়। এই দ্বীপে গভীর রাতেও মানুষ নির্বিঘ্নে চলাফেরা করত। অথচ এখন চুরি-ছিনতাই বেড়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্বীপে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের সুযোগে কিছু অপরাধমূলক কাজ হচ্ছে। আমরা জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ নিচ্ছি—কারা এসবের সঙ্গে জড়িত। আইনের আওতায় আনা হবে সবাইকে।’

সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক অজিত কুমার দাস বলেন, ‘দ্বীপে চুরি-ছিনতাইয়ের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। কেউই রেহাই পাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত