Ajker Patrika

স্কুল খোলায় তাদের পৌষ মাস

হোসাইন জিয়াদ, চট্টগ্রাম
স্কুল খোলায় তাদের পৌষ মাস

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কখনো তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র, কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে হবে তা ভাবেননি শিক্ষকেরা। কিন্তু করোনা সতর্কতায় এবার শিক্ষা সামগ্রীর পাশাপাশি স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য কিনতে হচ্ছে ইনফ্রা রেড থার্মাোমিটার, মাস্ক, স্যানিটাইজার, বেসিনসহ নানা রাসায়নিক সামগ্রী। তা ছাড়া এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন করে প্রয়োজন পড়ছে হোয়াইট বোর্ড, মার্কার, প্রিন্টিং পেপার, পিন, কাগজ, কলম, টেপসহ অন্তত ৩০ ধরনের শিক্ষা উপকরণ ।

স্কুল খোলার পর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর প্রয়োজন পড়ছে বই, খাতা, স্কুল ড্রেস, জুতোসহ নানা রকম শিক্ষা সামগ্রীরও।

সব মিলিয়ে বলা যায়, শিক্ষা সামগ্রীর ব্যবসা এখন চাঙা। বিক্রি এতটাই বেড়েছে যে সাদা জুতো, ড্রেস, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ নানা পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে বাজারে। সুযোগ বুঝে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। বলা চলে, দেড় বছর পর সুদিন দেখছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম জেলায় প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সরকারি–বেসরকারি কলেজ ও কিন্ডার গার্টেন মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অন্তত ২০ হাজার। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। যাদের সবাই কিছু না কিছু কিনছেন বাজারে।

নগরীর রেয়াজ উদ্দিন বাজারের গোলাম রসুল মার্কেটে আসা চাইল্ড হেভেন স্কুলের শিক্ষক হানিফ মজুমদার বলেন, ‘আমি হোয়াইট বোর্ড, স্কেল, মার্কার, ফাইলসহ নানা সামগ্রী কিনছি। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বাড়তি। ৩০০ টাকার হোয়াইট বোর্ড ৪০০ টাক। মার্কারের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। তা ছাড়া চাহিদা মতো পাচ্ছি না।’

এ মার্কেটে স্টেশনারি সামগ্রীর পাইকারি দোকান আছে অন্তত বিশটি। প্রত্যেকটি দোকানেই দিন রাত ভিড়। এখানকার নুর পেপার হাউসের বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, স্কুল–কলেজ খোলার খবরে গত এক সপ্তাহ ধরে বিক্রি বেড়েছে। পুরো জেলা থেকে শিক্ষক ও খুচরা দোকানিরা আসছেন। হঠাৎ চাহিদা বাড়লে, দাম তো একটু বাড়বেই। অনেক দিন লোকসান দিয়েছি। এখন বেচা–বিক্রি শুরু হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেচেছি।

আন্দরকিল্লা নগরীর লাইব্রেরি পাড়া হিসেবে খ্যাত। তবে বিক্রি বাড়লেও এখনো খুব একটা ব্যবসা জমেনি বলে দাবি এখানকার বিক্রেতাদের। পাঠক বুকসের বিক্রেতা কাউসার হোসেন বলেন, যেভাবে বই খাতা বিক্রি হবে ভেবেছি, সেভাবে এখনো হচ্ছে না। এই সপ্তাহেতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হলো, দেখি আগামী সপ্তাহের দিকে হয়তো বেচা বিক্রি বাড়বে।

পাশেই কামরাবাদ স্টেশনারির এক বিক্রেতা জানান, অন্তত ৩০ ধরনের পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। কিছু জিনিস আমদানি করতে হয়। একসঙ্গে স্কুল কলেজ খোলায় চাহিদা মতো সংগ্রহ নেই, তাই বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে।

চট্টগ্রামে চিকিৎসা সামগ্রী ও ল্যাবের রাসায়নিকের জন্য বিখ্যাত আন্দরকিল্লার তাজ স্টেশনারি। এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. রিদোয়ান জানান, ‘সব স্কুলে অন্তত দুটি করে হলেও ৪০ হাজারের মতো ইনফ্রা রেড থার্মোমিটার প্রয়োজন। এর বাইরে রসায়ন, পদার্থ ও জীব বিজ্ঞানের ল্যাবের জন্য নানা রকম রাসায়নিক, টেস্ট টিউব, বিকার, ফানেল, ওজন পরিমাপক যন্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম আছে, তাই দাম বাড়াইনি। বড় কথা হচ্ছে, এত পণ্য একসঙ্গে লাগছে। আমাদের কাছে তো মজুত নেই।’

জিইসি মোড়ে সন্তানের জন্য জুতো কিনতে আসা অভিভাবক ইয়াছমিন আক্তার বলেন, দেড় বছর আগের জুতো এখন আর বাচ্চার পায়ে হচ্ছে না। তাই সাদা জুতো খুঁজছি, বেশ কয়েকটি দোকানে দেখলাম, মাপ মতো পাচ্ছি না। আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন না কিনেই ফেরত যাচ্ছি।

হকার্স মার্কেটে ছেলের জন্য সাদা শার্ট কিনতে এসেছেন শহীদ উদ্দিন। তিনি বলেন, এখনতো সেলাই করার মতো সময় নেই, কিনতে এসে দেখলাম অন্তত ৫০ টাকা বাড়তি দাম বলছে বিক্রেতারা। ছেলে ক্লাস ফাইভে পড়ে। করোনার আগের জামাটি ১৫০ টাকায় কিনেছি, এখন ২২০ টাকায় কিনলাম।

সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত টেইলার্স এর দোকানিরা। গত কয়েক দিনে স্কুল ড্রেসের অর্ডার এসেছে প্রচুর। তাই ব্যস্ততাও বেড়েছে। বাওয়া স্কুলের সামনে টেইলার্স দোকানের মালিক আরিফ জানান, কিছু ড্রেস অগ্রিম সেলাই করে রেখেছিলেন, স্কুল খুললে ড্রেস লাগবে জানতাম। এখন বিক্রি বাড়ায় ভালো লাগছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে রেখে ‘৪ কোটি টাকা আদায়’

সব কমিটি থেকে নারীদের সিস্টেমেটিক্যালি সাইড করা হয়েছে: সামান্তা শারমিন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

একে একে আট বিয়ে, নয়বারের বেলায় গ্রেপ্তার ‘লুটেরা দুলহান’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত