Ajker Patrika

কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের স্ত্রী যা বললেন

সোহেল মারমা ও জমির উদ্দিন, বান্দরবানের রুমা থেকে
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮: ৫৬
কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের স্ত্রী যা বললেন

বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের যেখানে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে, সেখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে রুমা বাজারসংলগ্ন ইডেনপাড়া। যেখানে কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের কৈশোর কেটেছে। এলাকাটি বমপাড়া নামে পরিচিত। সেখানে কাঁচা-পাকা একটি টিনশেডের সাদাসিধা ঘরে থাকতেন নাথান বম। নাথানের বাবা-মা এখন কেউ বেঁচে নেই।

নাথানের স্ত্রী লেলসমকিম বম, ছোট ছেলে স্কেন্ডি ও নাথান বমের স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ে টেলি বম। তাঁর ছোট ছেলের বয়স পাঁচ বছর। তাঁর আরেক ছেলে ১৫ বছর বয়সী স্কলার থাকে ভারতে। স্কেন্ডি স্থানীয় একটি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে পড়ছে। পরিবারের দেওয়া তথ্যমতে, স্কলার ভারতে তার এক মামার বাসায় রয়েছে। লেলসমকিমের বাড়ি ইডেনপাড়াতেই। এ ছাড়া লেলসমকিমের বড় বোনের মেয়ে টেলি বম ও তাঁর পরিবার ইডেনপাড়ায় নাথানের বাড়িতে থাকেন।

আজকের পত্রিকার এই দুজন প্রতিবেদক সরেজমিন নাথান বমের বাড়ি পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গেটের প্রবেশমুখ দিয়ে মূল বাড়িতে ঢুকতেই তিনজনের ভাস্কর্য। ইট-বালি-সিমেন্টে তৈরি ভাস্কর্যের একেকটা ছবিতে তিনজনের চেহারা ফুটে উঠেছে। ওই সব ভাস্কর্যের একজন হলেন নাথান বমের নানা, অপর দুজন হলেন নাথানের বাবা-মা। তাঁদের সবার জন্ম-মৃত্যুর সাল ভাস্কর্যে দেওয়া রয়েছে। মূল বাড়িতে প্রবেশ গেটের সামনে রাখা আছে কাঠের আরও ভাস্কর্য। যেন পুরো বাড়িটায় ভাস্কর্যে ভরা।

বাড়িতে ঢুকতে সহযোগিতা করেন টেরি বম। তিনি বলেন, এখানে নাথান বম থাকেন না। তবে তাঁর স্ত্রী ও সন্তান থাকেন। তিনি বলেন, নাথানের স্ত্রী স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের চাকরি করেন। নাথানের স্ত্রী লেলসমকিম বমের কর্মস্থলের খোঁজ নিয়ে সেখানে গেলে তাঁর দেখা মেলে। তিনি রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। পরিচয় দিলে তিনি আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হলেও বিব্রত বোধ করেন। একপর্যায়ে লেলসমকিম বম বলেন, নাথানের সঙ্গে তাঁর তিন বছর ধরে যোগাযোগ নেই। তিনি এখানে আসেন না।

নাথানের স্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে তিনি নাথানকে বিয়ে করেন। নাথান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বেশির ভাগ সময় তিনি বিদেশে থাকতেন। বিশেষ করে ইউরোপের দেশ ইতালি, ফ্রান্স, হাঙ্গেরিসহ আরও কয়েকটি দেশে। সেখানে তাঁর এক্সিবিশন হতো। একবার বিদেশে গেলে আট-নয় মাস পর আসতেন।

কর্মস্থলে লেলসমকিম বম। ছবি: আজকের পত্রিকাতবে কয়েক বছর আগে সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে সরকার বলার পর নাথান আর বাড়ি আসছেন না। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ নেই তিন বছর হচ্ছে। 

লেলসমকিম বলেন, ইডেনপাড়ায় কেএনডিও নামে একটি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে নাথান জড়িত ছিলেন বলে তিনি জানতেন। সেখানে একটি লাইব্রেরিও আছে। ইডেনপাড়াতেই সংগঠনটির অফিস। এটা তৎকালীন সেনাবাহিনী উদ্বোধন করেছিল। এখন এটা পরিত্যক্ত। অফিসটি পাহাড়ের ঢালু জায়গায় ছিল। বর্ষাকালে পাহাড় ধসে অফিসটির পেছনের অংশ ভেঙে পড়ে। সাত-আট বছর হচ্ছে অফিসটি পরিত্যক্ত।

নাথান বমের বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকাতবে নাথানের সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের বিষয়ে লেলসমকিম কিছু জানেন না। তাঁর স্বামীও কখনো এ বিষয়ে তাঁকে কিছু বলেননি। তবে নাথানের স্ত্রী চান তাঁর স্বামী সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসুন। লেলসমকিম বম বলেন, ‘আমি চাই, আমার স্বামী সুস্থ জীবনে ফিরে আসুন। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তাঁর যাতে কিছু না হয়।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত