Ajker Patrika

ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দী ৩০ হাজার, আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজার

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ১৬: ৪১
বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ফেনীর শতাধিক গ্রাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ফেনীর শতাধিক গ্রাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ২১টি স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। বুধবার রাত পর্যন্ত ছাগলনাইয়া উপজেলার নতুন নতুন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাত হাজার মানুষ।

বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ছাগলনাইয়ার মাটিয়াগোধা, দক্ষিণ সতর, উত্তর সতর, লক্ষ্মীপুর, নিচিন্তা ও কাশিপুরসহ ১০টির বেশি গ্রামে প্রবল স্রোতে পানি ঢুকে পড়ে। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। বিপাকে পড়েছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পরশুরামের ১২টি এবং ফুলগাজীর ৯টি—মোট ২১টি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে। এর মধ্যে মুহুরী নদীর ১১টি, কহুয়া নদীর ৬টি এবং সিলোনিয়া নদীর ৪টি অংশে বাঁধ ভাঙনে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “দুই দশকে উত্তর সতরের নদীকূলের সড়কে কোনো উন্নয়ন হয়নি। প্রতিবছরই পানি ঢুকে গ্রাম প্লাবিত হয়। এবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ।”

পাঠাননগরের বাসিন্দা আজগর আলী বলেন, “পরশুরাম-ফুলগাজীর ভাঙন দিয়ে পানি এসে ছাগলনাইয়া প্লাবিত হচ্ছে। পানির চাপ আরও বাড়ছে। বৃষ্টি হলে ফেনী সদরেও পানি ঢুকে পড়তে পারে।”

ফেনী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত) জেলায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবারও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “বন্যাকবলিত চার উপজেলায় ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। সেখানে প্রায় সাত হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ছয় উপজেলায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, “রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু বাঁধ ভাঙা থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।”

ছাগলনাইয়ার ইউএনও সুবল চাকমা বলেন, “উপজেলায় ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে আমাদের টিম কাজ করছে।”

ফুলগাজীর ঘনিয়ামোড়ার বাসিন্দা হাসান ভূঞা বলেন, “পানি গলা সমান। বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছে না। এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তাও পাইনি।”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত