Ajker Patrika

দখল ও উচ্ছেদ নিয়ে এসি ল্যান্ড-বন কর্মকর্তার বিতণ্ডা, মধ্যস্থতায় ডিসি

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গর পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গর পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের রামুতে বন বিভাগের নির্মাণাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি পর্যটন স্পটে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে তর্কাতর্কির একটি ভিড়িও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৪৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যায়, রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. নূরুল ইসলামের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন। কক্সবাজার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হক কথা বলতে চাইলে এসি ল্যান্ড সাজ্জাদ জাহিদ তাঁর ওপর চড়াও হন। ক্ষুব্ধ এসি ল্যান্ড বলেন, ‘আপনি কে, আপনি কে ভাই? আমাকে কথা বলা শেখাচ্ছেন? আপনার কাছ থেকে কথা বলা শিখতে হবে?’

উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকেরা সেখানে ভিড় করেন। এসি ল্যান্ডের সঙ্গে আনসার সদস্য এবং ডিএফওর সঙ্গে বনকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজারে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গর পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গর পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম সোহেল জানান, মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন হিমছড়ি ঝরনা ও জাতীয় উদ্যান। এ ঝরনার পাশেই রয়েছে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গ। এই ঝরনা ঘিরে গড়ে ওঠা পর্যটনকেন্দ্র ইজারা দেয় বন বিভাগ। এর পাশে থাকা রামু উপজেলা প্রশাসনের হিমছড়ি বাজার, গাড়ি পার্কিং ও পাবলিক টয়লেট রয়েছে।

ইউপি সদস্য সোহেল জানান, সম্প্রতি পর্যটন স্পট ঝরনায় সংস্কারকাজ শুরু করে বন বিভাগ। এতে নতুন গেট নির্মাণের জন্য পাবলিক টয়লেটের কিছু অংশ বৃহস্পতিবার সকালে ভেঙে দেয় বন বিভাগ। বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর রামুর এসি ল্যান্ড ঘটনাস্থলে এসে টয়লেট ভেঙে দেওয়ার কারণ জানতে চান বন বিভাগের কর্মকর্তার কাছে। বন বিভাগ গেট নির্মাণের প্রয়োজনে এবং টয়লেটটি বন বিভাগের জমিতে রয়েছে বলে দাবি করেন। এরপর এসি ল্যান্ডের নির্দেশে হিমছড়ি ঝরনার উত্তর পাশে বন বিভাগের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিসর্গর পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ১ নম্বর খাস খতিয়ানের দাবি করে সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। এ নিয়ে তখন দুই দপ্তরের কর্মকর্তারা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

বন বিভাগের কক্সবাজারের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হক জানান, নিসর্গ পুরোটাই বন বিভাগের ২ নম্বর খতিয়ানের। সেখানে বন পাহারার গোলঘর, ঘেরা-বেড়া, হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের সাইনবোর্ডটি ভেঙে দিয়েছেন এসি ল্যান্ড। তিনি বলেন, সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন মূলে রিজার্ভ ফরেস্ট এবং প্রোটেক্টেড এরিয়া হিসেবে ঘোষিত।

এদিকে আজ শনিবার দুপুরে সার্কিট হাউসে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন রামু উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক স্যার দুই পক্ষের ঘটনা শুনেছেন। সেখানে বন বিভাগ এবং ১ নম্বর খাস খতিয়ানের জায়গা রয়েছে। খাসজমিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখতে বলেছিল এসি ল্যান্ড। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। দুই পক্ষের কথা থেকে খণ্ডিত অংশ প্রচার হওয়ায় একটু বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘এসি ল্যান্ড বন বিভাগের বেশ কিছু স্থাপনা ভাঙচুর করেছে। আমাদের প্রকাশ্যে অপদস্থ করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসক বন বিভাগের নির্মাণাধীন সংস্কারকাজ স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রুয়া নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের বর্জন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামায়াতপন্থী ২৭ জন নির্বাচিত

সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ

‘পাপ কাহিনী’র হাত ধরে দেশের ওটিটিতে ফিরল অশ্লীলতা

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

আওয়ামী লীগ নেতাকে ধরতে গিয়ে ছেলের বঁটির আঘাতে এসআই আহত, আটক ২

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত