Ajker Patrika

কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব

  • উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলি জমি থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে টপ সয়েল।
  • এসব মাটি যাচ্ছে ইটভাটা এবং ঘরবাড়ি তৈরির কাজে।
  • মাটি বহন করার গাড়ির কারণে আশপাশের জমি এবং সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে তোলা হচ্ছে গাড়িতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কাটার যেন রীতিমতো হিড়িক পড়েছে। এসব মাটি যাচ্ছে ইটভাটা এবং ঘরবাড়ি তৈরির কাজে। মাটি কাটতে ব্যবহার করা হচ্ছে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর)। ট্রাক বা ট্রাক্টরে এসব মাটি বহন করায় আশপাশের জমি এবং সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে খনিজ ও জৈব উপাদান বিশেষ করে হিউমাসসমৃদ্ধ (জৈব কণা) টপ সয়েল কেটে ফেলার কারণে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি। কৃষিবিদেরা বলছেন, টপ সয়েল কাটার কারণে বেশ কয়েক বছর ওই সব জমিতে কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন হবে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের গাব্দেরগাঁও, পাড়া গাব্দেরগাঁও গ্রাম, পাইকপাড়া ইউনিয়নের শাহাপুর, ইছাপুরা, দায়চারা, কড়ৈতলী চৌরাস্তা, ভাওয়াল গ্রামে, চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্তের বিল, আলোনিয়া গ্রাম, গুপ্টি ইউনিয়নের গল্লাক, খাজুরিয়া গ্রাম, সুবিদপুর ইউনিয়নের কামতা, সুবিদপুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। একশ্রেণির ট্রাকমালিক ও চালক কৃষকদের প্রলোভন দেখিয়ে মাটি কিনে নিচ্ছেন। প্রতি ট্রাক মাটি তাঁরা বিক্রি করছেন ১ হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার টাকায়।

গুপ্তের বিল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষিজমিতে দুই থেকে আড়াই ফুট গভীর করে খননযন্ত্র ব্যবহার করে মাটি কাটা হচ্ছে। বোরোর আবাদ শুরু না হওয়ায় ট্রাকগুলো জমির মাঝখান দিয়ে চলাচল করছে। বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব কটি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জমির মালিক ও মাটি কাটার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা বলছেন, বসতভিটা ভরাট ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের জন্য মাটি কাটা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে মাটি কাটার কাজে এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) ব্যবহার করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষিজমির মাটি কেনা-বেচায় যুক্ত রয়েছে প্রভাবশালী চক্র। ফলে নির্বিকার সাধারণ কৃষকেরা। এ নিয়ে স্থানীয়রা কথা বলতেও ভয় পান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রশাসনের লোকজন এলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তাঁদের কি অপরাধীরা মানছে না, নাকি ম্যানেজ হচ্ছে—বিষয়টি আমাদের বুঝে আসছে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার বলেন, কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার কারণে আগামীতে কৃষি আবাদ হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, সঠিক তথ্য পেলে এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত