Ajker Patrika

রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে সংক্রমণ, টেকনাফে কঠোর লকডাউন

প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ মে ২০২১, ২০: ১০
রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে সংক্রমণ, টেকনাফে কঠোর লকডাউন

টেকনাফ (কক্সবাজার): রোহিঙ্গা শিবির ও স্থানীয়দের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় টেকনাফ উপজেলায় দশ দিনের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে লকডাউন কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি টেকনাফের একটি এবং কুতুপালংয়ে চারটি রোহিঙ্গা শিবিরকে অতি সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সাথে গত ১৯ মে জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির অনলাইন সভার পরই এ লকডাউন ঘোষণা করা হলো। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় টেকনাফ উপজেলায় লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে দিন দিন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২১ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শাহিনা আক্তার চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল মনসুর প্রমুখ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী জানান, টেকনাফ উপজেলায় করোনা সংক্রমণে ঊর্ধ্বগতির কারণে আজ থেকে উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালীন উপজেলার ভেতরে বা বাইরে কোনো পরিবহন/ব্যক্তি যাতায়াত করতে পারবে না। অর্থাৎ টেকনাফ থেকে উখিয়া বা কক্সবাজার সদর উপজেলায় যাওয়া–আসা করা যাবে না। হাট–বাজার ও দোকানপাট বেলা ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে ওষুধের দোকান/ফার্মেসি খোলা থাকবে।

ইউএনও আরও বলেন, হঠাৎ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ের চারটি এবং টেকনাফের একটি বড় ক্যাম্পকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

টেকনাফে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্রশীল জানান, উপজেলায় চলতি মাসে এখন পর্যন্ত (২০ মে) ১৪৫ জন করেনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবিরও রয়েছে। ৪৫ জন রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, দিন দিন রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনতে পারলে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতো।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামসুদ্দৌজা জানান, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টেকনাফের ২৪ নম্বর এবং উখিয়ার ২, ৩, ৪ ও ১৫ নম্বর ক্যাম্পে চলাচলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। শিবিরে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওষুধ ও খাবারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

এদিকে কক্সবাজারে গতকাল পর্যন্ত ৪১ হাজার ৪৭৭ জন রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় ৩৪টি (টেকনাফে ১৩ ও উখিয়ায় ২১) ক্যাম্পের ৯১৩ জনের করোনাভাইরাস পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানান কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তা ডা. তোহা। আর এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। ডা. তোহা বলেন, এতদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকলেও চলতি মাসে অবনতি হয়। গত ১৪ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে ১৬৫ জন রোহিঙ্গার দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত