Ajker Patrika

দেবিদ্বারে হাইড্রোলিক হর্নের উচ্চ শব্দে বিপর্যস্ত জনজীবন

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
দেবিদ্বারে হাইড্রোলিক হর্নের উচ্চ শব্দে বিপর্যস্ত জনজীবন

কুমিল্লার দেবিদ্বারে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজির হাইড্রোলিক হর্নের উচ্চশব্দে মারাত্মকভাবে বেড়েছে শব্দদূষণ। পৌর সদর এলাকায় বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল নয়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত হাজার হাজার বাস, ট্রাক্টর, অটোরিকশা ও সিএনজি চলাচল করে। এসব যানবাহনের অধিকাংশই হর্ন হাইড্রোলিক (উচ্চ শব্দের)। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। 

নিউইয়র্ক প্রবাসী ডা. ফেরদৌস খন্দকার শব্দ দূষণের ক্ষতিকর সম্পর্কে বলেন, উচ্চমাত্রার শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তি ও স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। কানে শোনার ক্ষমতা কমে যায়, ঘুম কম হয়, বিরক্তির মাত্রা বেড়ে যায়। শব্দের কারণে শিশুদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়। হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও হয় দীর্ঘ মেয়াদে। 

সোমবার সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও এসএ সরকারি কলেজ রোডে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট বড় বিভিন্ন যানবাহনের লম্বা জট। জট খুলতেই একসঙ্গে হর্নের তীব্র আওয়াজ। চোখের দেখায় বাস-মিনিবাস অটো, সিএনজি ও মোটরবাইক হর্ন বাজাতে বাজাতে সামনের দিকে চলছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পথচারী, ব্যবসায়ী ও স্কুলগামী শিশুরা। 

 ২০০৬ সালের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী, কোথাও কোনো হাসপাতাল থাকলে সেটি ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ ছাড়া ‘নীরব এলাকায় যানবাহন চলাচলের সময় কোনো প্রকার হর্ন বাজানো যাবে না।’ 

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের এক পাশে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অন্যপাশে আরও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ হাসপাতালগুলোতে শত শত রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নেন। কিন্তু নানা রকম যানবাহনের হর্নের আওয়াজে রোগীদের অবস্থা বিপর্যস্ত। 

শব্দ দূষণ আইনের বিধিতে বলা আছে, নীরব এলাকায় হর্ন বাজালে প্রথমে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। আবার নিয়ম ভাঙলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা জরিমানা করা হবে। কিন্তু দেবিদ্বারে এর প্রয়োগ হয় না বললেই চলে। 

 ‘স্বাস্থ্যে শব্দের প্রভাব’একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, হঠাৎ শব্দে (ইমপালস সাউন্ড) ও দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চ শব্দের (৭৫ থেকে ৮৫ ডেসিবেল) মধ্যে থাকলে মানুষ শ্রবণক্ষমতা হারাতে পারে। কারণ, এতে কানের কোষ (সেল) মারা যায়। কানের কোষ মারা গেলে তা মনোযোগের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই কোষ নতুন করে আর তৈরি হয় না। 

উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুরাদনগর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মো. কবীর হোসেন বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘দেবিদ্বারে চিকিৎসা নিতে এসে মাথার যন্ত্রণা নিয়ে ফিরছি। গাড়ির হর্নের শব্দ মাথার মগজে ঢুকে আছে। এটা তো ভাই কোনো জীবন হতে পারে না।’ 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, ‘বেশির ভাগই চালকদের প্রশিক্ষণ নেই। তাঁরা রাস্তায় অহেতুক হর্ন বাজান। এতে মারাত্মকভাবে বেড়েছে শব্দ দূষণ। শিশুসহ সব বয়সী মানুষের শ্রবণ শক্তি দিন দিন কমছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশিক উন নবী তালুকদার বলেন, হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের জন্য কারও কাছ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে হাইড্রোলিক হর্ন যারা বাজায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত