Ajker Patrika

হ্রদের ডুবোচরে তরমুজে কৃষকের হাসি

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
হ্রদের ডুবোচরে তরমুজে কৃষকের হাসি

রাঙামাটির লংগদুতে চলতি মৌসুমে হ্রদের ডুবোচরে (জলেভাসা জমি) তরমুজের ব্যাপক আবাদ করা হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। সেই বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। 

লংগদু উপজেলা মারিশ্যাচর এলকার তরমুজ চাষি আনোয়ার মিয়া বলেন, হ্রদের জলেভাসা ডুবোচরে প্রায় দুই বিঘা জমিতে ৫০০ থালা (চারা গাছ) তরমুজের আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রথমবার ফল কাটলে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারবো। এভাবে তিন/চার বার ফসল তোলা যাবে। তাতে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বিক্রি করা যাবে। 

আনোয়ার জানান, তরমুজ আবাদ করতে সব মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তাঁর। খরচ বাদ দিলে দেড় লাখ টাকার মতো লাভ থাকবে বলে আশা করছেন তিনি। 

লংগদু সদর ইউনিয়নের বারবুনিয়া গ্রামের আরেক চাষি জানান, এবার সাড়ে তিন বিঘা টিলাজমিতে ৭০০ থালা তরমুজের আবাদ করেছেন। এতে খরচ বাদ দিলে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মতো লাভ হবে তাঁর। 

তবে মানসম্পন্ন বীজ না পাওয়ায় কিছু চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাজারের বীজে প্রতারিত হয়েছেন তাঁরা। 

লংগদুর সোনাই এলাকায় ডুবোচরে তরমুজ চাষ করা হচ্ছেসোনাই-মাল্লাদীপ গ্রামের তরমুজ চাষি মো. একরাম আলী ও ভাঙ্গামুড়া এলাকার তরমুজ চাষি আব্দুস সালাম বলেন, দোকান থেকে বীজ কিনে রীতিমত প্রতারিত হয়েছেন। একরাম আলী এক একর জলেভাসা টিলা জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আশানুরূপ ফলন হয়নি। তাই লাভের আশা নেই। আব্দুস সালামও একই অবস্থা। 

স্থানীয় তরমুজ ব্যবসায়ী বাদশা জানান,২ / ৩ কেজি ওজনের তরমুজ একশ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে লংগদু সদরে সতেরো কেজি ওজনের একটি তরমুজ সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। লংগদুতে উৎপাদিত তরমুজ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা শহরে যাচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রতন চৌধুরী জানান, লংগদুর সদর ঝর্ণাটিলা, ফোরেরমুখ, কালাপাকুজ্যা, বারবুনিয়া, গলাছড়ি, মারিশ্যাচর, ভাসাইন্যাদম এলাকায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলন জাতের তরমুজের আবাদ হয়েছে। 

এসব এলাকার কৃষকেরা এবার গ্লোরি, চ্যাম্পিয়ন (কোরিয়া), ফিল মাস্টার জাতের তরমুজ বেশি আবাদ করেছেন। কৃষি বিভাগ আশা করছে, হেক্টর প্রতি গড় ফলন হবে প্রায় ৮ টন। 

তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের আবাদ অনেক কম হয়েছে। 

কারণ হিসেবে কৃষি কর্মকর্তা রতন চৌধুরী বলেন, এ বছর কৃষকেরা দেরিতে তরমুজের আবাদ শুরু করা, ভেজাল বীজ ক্রয় এবং কৃষি বিভাগের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই তরমুজের আবাদ করার কারণে অনেকের ফলন তেমন ভালো হয়নি। এই কারণে লাভের পরিবর্তে অনেককে লোকসানও গুনতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত