Ajker Patrika

পালিয়ে আসা ১৭৭ জান্তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, ২১: ৫৮
পালিয়ে আসা ১৭৭ জান্তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১৭৭ জান্তা সদস্যকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. মুজাহিদ উদ্দিন। তবে বিষয়টি অতি গোপনীয় আর রাষ্ট্রীয় হওয়ায় তিনি দিনক্ষণ জানাতে রাজি হননি। 

আজ রোববার (২৪ মার্চ) বিকেলে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিষয়টি অতি গোপনীয় আর রাষ্ট্রীয়। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই দেশের ঊর্ধ্বমহল সব বিষয় ঠিক রেখে এটি সম্পন্ন করবে। অতি শিগগিরই তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে। প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে।’ 

এর আগে ১১ মার্চ দুপুর ও বিকেলে তিন দফায় মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর ১৭৯ জন সদস্য রাখাইন রাজ্য থেকে সীমান্তের জামছড়ি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তাঁদের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদরের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়। 

এর পর থেকেই বিদ্যালটির প্রথম ও দ্বিতল ভবন রঙিন কাপড়ে মোড়ানো রয়েছে। তবে ওই দিন অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে দুজন ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তি। তাঁদের ১২ মার্চ মিয়ানমারে পুশব্যাক করা হয়। বাকি ১৭৭ জন বিজিবি-১১-এর তত্ত্বাবধানে ১৩ দিন ধরে এখানে আশ্রিত রয়েছেন। 

সূত্র জানিয়েছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চেরারমাঠ সীমান্তের ওপারে জান্তা বাহিনীর ফেলে যাওয়া ৫০ বছরের পুরাতন একটি ঘাঁটি দীর্ঘ এক বছর ধরে পরিত্যক্ত ছিল। আজ (২৪ মার্চ) থেকে ঘাঁটি বিদ্রোহী আরকান আর্মি কিছুটা সংস্কার করে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা এখন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জান্তা সদস্যদের ঠেকাতে নতুন করে এখানে আবস্থান করছে বলে। 

চেরারকূলের বাসিন্দা ছৈয়দ হোসেন, আশরাফজামান ও দলিল বকসু এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে অন্যান্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। 

রোহিঙ্গা যুবকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ
অপর দিকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলার বুথিডং টাউনশিপ এলাকায় এলআইআর-৫৫২ ব্যাটালিয়ন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মি দীর্ঘদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এ যুদ্ধে জান্তা বাহিনী স্থানীয় রোহিঙ্গা যুবকদের স্বল্পমেয়াদি সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধের সামনের সারিতে পাঠাচ্ছে। মূলত তাঁদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বলে সূত্রে জানিয়েছে।

ফলে গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) সাতজন রোহিঙ্গা সৈনিক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তাঁরা মিয়ামারের সিটুয়ে জেলার আইডিপি রোহিঙ্গা শিবিরের সদস্য বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতা আলতাফ হোসেন ও শাব্বির আহসদ। 

তাঁরা জানান, মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলার, বুথিডং ও সিটুয়ে হতে মিয়ানমার সেনা ও পুলিশ সদস্যরা রোহিঙ্গা যুবকদের আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এ কারণে অধিকাংশ রোহিঙ্গা যুবক প্রাণের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে কৌশলে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় করছেন। আবার অনেকে নৌপথে অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। ওপারে সংঘাতের সুযোগে উভয় দেশের কয়েক হাজার চোরাকারবারি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় অবৈধ ব্যবসাসহ চোরাচালানে জড়িয়ে কোটিপতি বনে গেছে। তবে বিজিবি তাঁদের অভিযান ও তৎপরতা বাড়িয়েছে বলেও সূত্র উল্লেখ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত