Ajker Patrika

‘চট্টগ্রামের ৭ থানা আমাদের হাতে’, অডিও ভাইরাল

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ০৯
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বাবু। ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বাবু। ছবি: সংগৃহীত

‘দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতটি থানা আমাদের হাতে আছে। মানে, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়ার হাতে। প্রতিদিন রাতে ওসি, এসআইরা চেয়ারম্যানের (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া) বাসায় আসেন। পটিয়া ও কোতোয়ালি থানার ওসি ইদ্রিস মিয়ার বাসায় খাবারদাবার নিয়ে আসেন। জাহাজের বড় বড় মাছ পর্যন্ত নিয়ে যান। সেহরি পর্যন্ত খেয়ে যান।’

কথাগুলো দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বাবু নামের এক যুবকের। সম্প্রতি জামশেদের সঙ্গে জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নাজিম উদ্দিনের ৭ মিনিট ২ সেকেন্ডের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এলাকায় পোস্টারে বিএনপির নেতা ইদ্রিস মিয়ার সঙ্গে জামশেদের ছবি রয়েছে। কথোপকথনে তিনি ইদ্রিস মিয়াকে নানা হিসেবে সম্বোধন করেন। ইদ্রিস মিয়ার নামে জামশেদ ছনহরা এলাকায় মাটির ব্যবসায় যুক্ত জামায়াত নেতা নাজিম উদ্দিনের কাছে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। থানায় জব্দ নাজিমের ট্রাক ছাড়িয়ে নিতে এ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে রাতের আঁধারে মাটি কাটার সময় নাজিম উদ্দিনের একটি ট্রাক জব্দ করে পটিয়া থানায় নিয়ে যায়। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘আমি টাকা দেওয়ার লোক, টাকা নেওয়ার লোক নয়। বিএনপির একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারই অংশ হিসেবে এ ধরনের কথাগুলো বলা হচ্ছে। আর জামশেদ নামের কারও সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। আমি এখন রাজশাহীতে রয়েছি। সেখান থেকে আসলে জামশেদ ও নাজিম দুজনকেই পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাব।’

ছনহরা ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর নেতা নাজিম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
ছনহরা ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর নেতা নাজিম উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে জামশেদ ওই জামায়াত নেতাকে আরও বলেন, ‘যদি আপনি ইদ্রিস মিয়াকে না বুঝেন, তাহলে ইদ্রিস মিয়াও আপনাকে বুঝবে না। দক্ষিণ জেলার সাতটি থানার মধ্যে কোন থানার কোন ওসি টাকা দাবি করে, আমাকে জানান। বাকিটা ইদ্রিস মিয়া দেখে নেবেন।’

নাজিম উদ্দিন ছনহরা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর নেতা বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জামায়াত নেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কে কোথায় অডিও রেকর্ড ছেড়ে দিয়েছে জানি না। আমি একজনের আলাপে আছি। আপনাকে পরে ফোন করব।’ কিন্তু পরে তিনি আর ফোন করেননি। পরে তাঁকে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ফোন করা হলেও তিনি আর ধরেননি।

এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ‘মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ওই ট্রাক আটক করা হয়। ফসলি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে এখানে নিয়মিত অভিযান চলে। অডিও ভাইরালের বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।’

এ বিষয়ে জানতে জামশেদ হোসেনের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত