Ajker Patrika

অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ: ক্ষতিগ্রস্ত রুবাইয়া গ্রুপের ৪ কারখানা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৫: ২০
অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ: ক্ষতিগ্রস্ত রুবাইয়া গ্রুপের ৪ কারখানা

প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার বিকেলে রুবাইয়া গ্রুপের এইচ স্টিল রোলিং মিলে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আবদুল মালেক (৪৮)। হঠাৎ পাশের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি করতে শুরু করেন তিনি। বিস্ফোরণে কারখানাটির টিনের শেড ও একটি চারতলা ভবনের কিছু অংশ বিধ্বস্ত হয়েছে।  শুধু এইচ স্টিল নয়, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই গ্রুপের রুবাইয়া অক্সিজেন প্ল্যান্ট, রুবাইয়া প্লাস্টিক কারখানা ও রুবাইয়া ভেজিটেবল অয়েল কারখানা। অবশ্য চারটি কারখানাতেই আপাতত উৎপাদন বন্ধ থাকায় কোনো শ্রমিক কাজ করছিলেন না বলে জানান এইচ স্টিল রোলিং মিলের ম্যানেজার ওমর ফারুক খোকন।

আহত নিরাপত্তা প্রহরী আবদুল মালেক জানান, বিস্ফোরণের আগে তিনি কারখানার মূল ফটকের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়, মনে হয় পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছে। তার পাশে থাকা কারখানার চারতলা ভবনের কাচের জানালা ও গ্রিলের দরজা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। তাদের কারখানার টিনের শেডটি বিধ্বস্ত পাশাপাশি অধিকাংশ টিন উড়ে বাইরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তিনি প্রাণে বাঁচতে সামনে থাকা লোহার টেবিলের নিচে ঢুকে পড়েন। তবে উড়ে আসা টিনের টুকরোর আঘাতে আহত হন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আজ রোববার সকালে কারখানায় ফিরে আসেন তিনি।

এইচ স্টিল রোলিং মিলের ম্যানেজার ওমর ফারুক খোকন জানান, সীমা স্টিলের পাশে তাঁদের কারখানাগুলো। বিস্ফোরণে কারখানা চারটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রুবাইয়া অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও রুবাইয়া স্টিল রোলিং মিল। এই কারখানা দুটির ভবন ভেঙে পড়ার পাশাপাশি পুরো অক্সিজেন প্ল্যান্ট ভেঙে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ভেঙে গেছে কারখানা দুটির ভেতরে থাকা টিনের শেডগুলো। বিস্ফোরণে তাদের চারটি কারখানার প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ওমর ফারুক খোকন আরও বলেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি সহায়তায় আশ্বাস দিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, তিনি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টসহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত আশপাশের কারখানা পরিদর্শন করেছেন। কারখানাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল (কেশবপুর) এলাকার সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন। বিস্ফোরণের পরে আগ্রাবাদ, সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর শুরু করেন উদ্ধার অভিযান। টানা পাঁচ ঘণ্টা অভিযান চালানোর পর রাত ৯টার পর প্রথম দিনের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত