কুমেক হাসপাতাল
দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
রোগী ভর্তি, তাঁর জন্য শয্যার ব্যবস্থা, রোগীর প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শয্যা পেলে মেঝে থাকার ব্যবস্থা—সবকিছুই হয়ে থাকে দালালকে টাকা দেওয়ার বিনিময়ে। হাসপাতালে নিয়মিত ঘটে চুরির ঘটনাও। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে হাসপাতালের নার্সরাও হয়রানির শিকার হন। বছরের পর বছর এ জিম্মিদশা চলছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক)। হাসপাতালের একাধিক সূত্র বলছে, এই দালালেরা স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগসাজশে এসব করেন। ফলে অনেকটাই ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ তাঁরা।
কুমেকের জীর্ণ চিত্রটি ধরা পড়ে প্রধান ফটকেই। হাসপাতালের প্রবেশপথে অবৈধ দখলের কারণে যানজট লেগেই থাকে। এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে হকার। তাঁরা দোকান দিয়ে বসে রয়েছেন দুই পাশে। এসব পেরিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। কোনো রকম রোগীকে খাতায় তালিকাভুক্ত করে ভর্তি নিলেই দায়িত্ব শেষ এ বিভাগের। এরপর রোগীর সব দায়িত্ব যেন উপস্থিত দালালদের। দালালেরাই রোগীকে শয্যায় নিয়ে যাওয়া, সিট পাইয়ে দেওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো, ডাক্তার দেখানো ও রোগীর আর্থিক অবস্থা বুঝে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া—সব দায়িত্ব যেন দালালদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বিভাগের দায়িত্বরত এক স্টাফ নার্স বলেন, ‘দালালেরা স্থানীয় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার আশীর্বাদপুষ্ট। আমরা অসহায়। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁদের হাতে মারধরের শিকার হতে হয়েছে আমাদের অনেক স্টাফকে।’
হাসপাতালে যা ঘটে
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার দারোরা এলাকা থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে গত রোববার দুপুরে কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে আসেন আব্দুর রশিদ (৫৫)। জরুরি বিভাগের সামনে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে আসামাত্র এক দালাল রোগীর অবস্থা ভালো নয় বলে তাঁকে অটোরিকশা থেকে নামতে বারণ করেন। পরে রোগীর কাগজপত্র নিয়ে ভর্তির টিকিট কেটে রোগীকে নিয়ে যেতে দেখা গেল সংশ্লিষ্ট বিভাগে। দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি দালাল।
কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত (স্টাফ নার্স) ফরহাদ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘মাঝেমধ্যে প্রশাসন দিয়ে অভিযান চালালে তাঁরা কিছু সময়ের জন্য সরে যায়, আবার পরে চলে আসে। স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল বাসিন্দা হওয়ায় তাঁরা আমাদের কথা শোনেন না। আমরা প্রতিবাদ করলে বাড়ি ফেরার পথে হামলা ও মারধর করেন।’
৫০০ শয্যার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোগী চিকিৎসাধীন। তবে রোজায় চাপ কিছুটা কমেছে। গত রোববার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে জেনারেল বেডে ছিলেন ৮২৮ জন, পেয়িং বেডে ১৫, কেবিনে ১৩, আইসিইউতে ১৬ জনসহ ৮৭২ জন রোগী ভর্তি ছিল। ফলে শয্যার তুলনায় অতিরিক্ত রোগীর জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, এই অতিরিক্ত বেডের জন্য হাসপাতালের আয়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকাও নিচ্ছেন। ফলে যত্রতত্রই দিচ্ছেন এসব শয্যা।
৮ মার্চ ৫০০ টাকা নিয়ে পাঁচতলার অরক্ষিত বারান্দায় এক রোগীর শয্যার ব্যবস্থা করা হয়। রাতে ওই পাঁচতলা ভবনের বারান্দা থেকে রোগী নিচে পড়ে মারা যান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা একজন আয়া বলেন, ‘এ হাসপাতালে আমরা প্রায় ১৭৫ জন আয়া-ক্লিনার কাজ করছি। গত কয়েক মাস আমরা বেতন পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে চলি। রোগীর সেবাযত্ন করি, থাকার ব্যবস্থা করে দেই।’ একই অবস্থা অন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও।
নিত্য চুরির ঘটনা
এদিকে হাসপাতালে নিয়মিত ঘটে চুরির ঘটনাও। স্বর্ণালংকার, মোবাইল, টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি কুমেকে নিত্যদিনের ঘটনা। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার খলিলাবাদ থেকে কুমেক হাসপাতালে নবজাতককে দেখতে আসেন মায়া রানী। নাতিকে সোনার চেইন দেবেন, তাই সেটি গলায় পরেছিলেন। হাসপাতালের লিফটে ওঠার সময় জটলার মধ্যে সোনার ওই চেইন গায়েব হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ পারভেজের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
কুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নিশাদ সুলতানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পের আওতায় আমাদের আউটসোর্সিংয়ে যাঁরা কাজ করেন তারা গত কয়েক মাস বেতন পাচ্ছেন না। তারপরও তাঁরা কাজ করছেন। তাঁরা কাজ বন্ধ করে দিলে ভোগান্তি আরও বাড়বে। হাসপাতালের চোর-দালালদের উৎপাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করতে।’
রোগী ভর্তি, তাঁর জন্য শয্যার ব্যবস্থা, রোগীর প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা, শয্যা পেলে মেঝে থাকার ব্যবস্থা—সবকিছুই হয়ে থাকে দালালকে টাকা দেওয়ার বিনিময়ে। হাসপাতালে নিয়মিত ঘটে চুরির ঘটনাও। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে হাসপাতালের নার্সরাও হয়রানির শিকার হন। বছরের পর বছর এ জিম্মিদশা চলছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক)। হাসপাতালের একাধিক সূত্র বলছে, এই দালালেরা স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগসাজশে এসব করেন। ফলে অনেকটাই ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ তাঁরা।
কুমেকের জীর্ণ চিত্রটি ধরা পড়ে প্রধান ফটকেই। হাসপাতালের প্রবেশপথে অবৈধ দখলের কারণে যানজট লেগেই থাকে। এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে হকার। তাঁরা দোকান দিয়ে বসে রয়েছেন দুই পাশে। এসব পেরিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। কোনো রকম রোগীকে খাতায় তালিকাভুক্ত করে ভর্তি নিলেই দায়িত্ব শেষ এ বিভাগের। এরপর রোগীর সব দায়িত্ব যেন উপস্থিত দালালদের। দালালেরাই রোগীকে শয্যায় নিয়ে যাওয়া, সিট পাইয়ে দেওয়া, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো, ডাক্তার দেখানো ও রোগীর আর্থিক অবস্থা বুঝে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া—সব দায়িত্ব যেন দালালদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বিভাগের দায়িত্বরত এক স্টাফ নার্স বলেন, ‘দালালেরা স্থানীয় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার আশীর্বাদপুষ্ট। আমরা অসহায়। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁদের হাতে মারধরের শিকার হতে হয়েছে আমাদের অনেক স্টাফকে।’
হাসপাতালে যা ঘটে
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার দারোরা এলাকা থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে গত রোববার দুপুরে কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে আসেন আব্দুর রশিদ (৫৫)। জরুরি বিভাগের সামনে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে আসামাত্র এক দালাল রোগীর অবস্থা ভালো নয় বলে তাঁকে অটোরিকশা থেকে নামতে বারণ করেন। পরে রোগীর কাগজপত্র নিয়ে ভর্তির টিকিট কেটে রোগীকে নিয়ে যেতে দেখা গেল সংশ্লিষ্ট বিভাগে। দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি দালাল।
কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত (স্টাফ নার্স) ফরহাদ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘মাঝেমধ্যে প্রশাসন দিয়ে অভিযান চালালে তাঁরা কিছু সময়ের জন্য সরে যায়, আবার পরে চলে আসে। স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল বাসিন্দা হওয়ায় তাঁরা আমাদের কথা শোনেন না। আমরা প্রতিবাদ করলে বাড়ি ফেরার পথে হামলা ও মারধর করেন।’
৫০০ শয্যার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোগী চিকিৎসাধীন। তবে রোজায় চাপ কিছুটা কমেছে। গত রোববার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে জেনারেল বেডে ছিলেন ৮২৮ জন, পেয়িং বেডে ১৫, কেবিনে ১৩, আইসিইউতে ১৬ জনসহ ৮৭২ জন রোগী ভর্তি ছিল। ফলে শয্যার তুলনায় অতিরিক্ত রোগীর জন্য আলাদা থাকার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, এই অতিরিক্ত বেডের জন্য হাসপাতালের আয়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকাও নিচ্ছেন। ফলে যত্রতত্রই দিচ্ছেন এসব শয্যা।
৮ মার্চ ৫০০ টাকা নিয়ে পাঁচতলার অরক্ষিত বারান্দায় এক রোগীর শয্যার ব্যবস্থা করা হয়। রাতে ওই পাঁচতলা ভবনের বারান্দা থেকে রোগী নিচে পড়ে মারা যান।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা একজন আয়া বলেন, ‘এ হাসপাতালে আমরা প্রায় ১৭৫ জন আয়া-ক্লিনার কাজ করছি। গত কয়েক মাস আমরা বেতন পাচ্ছি না। আমরা কীভাবে চলি। রোগীর সেবাযত্ন করি, থাকার ব্যবস্থা করে দেই।’ একই অবস্থা অন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও।
নিত্য চুরির ঘটনা
এদিকে হাসপাতালে নিয়মিত ঘটে চুরির ঘটনাও। স্বর্ণালংকার, মোবাইল, টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি কুমেকে নিত্যদিনের ঘটনা। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার খলিলাবাদ থেকে কুমেক হাসপাতালে নবজাতককে দেখতে আসেন মায়া রানী। নাতিকে সোনার চেইন দেবেন, তাই সেটি গলায় পরেছিলেন। হাসপাতালের লিফটে ওঠার সময় জটলার মধ্যে সোনার ওই চেইন গায়েব হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ পারভেজের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
কুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নিশাদ সুলতানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পের আওতায় আমাদের আউটসোর্সিংয়ে যাঁরা কাজ করেন তারা গত কয়েক মাস বেতন পাচ্ছেন না। তারপরও তাঁরা কাজ করছেন। তাঁরা কাজ বন্ধ করে দিলে ভোগান্তি আরও বাড়বে। হাসপাতালের চোর-দালালদের উৎপাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করতে।’
চট্টগ্রামের আনোয়ারার বরুমছড়ায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে অস্ত্র, নগদ টাকা ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় মো. আব্দুল মজিদ (৪২) নামে এক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর আস্ফালন বেড়ে গেছে। তারা পরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অবমাননাকর বক্তব্য দিচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
১ ঘণ্টা আগেজুলকার নাইম বলেন, “ভাই, আমি মরি নাই। এখনো বেঁচে আছি। পত্রিকার পাতায় নিজের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যাই। সকালে বাজারে গেলে পরিচিত অনেকে চেয়ে থাকে। কেউ কেউ তো বলেই বসেছে, তুই নাকি মারা গেছিস। বাড়ি ফিরে গিয়ে মা-বাবাকে সব খুলে বলেছি।”
১ ঘণ্টা আগেমামলার তদন্ত কর্মকর্তা নওগাঁ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা, ভাঙচুরসহ একাধিক মামলায় খোদাদাত খাঁন পিটু অভিযুক্ত। তাঁকে বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সকালে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’
১ ঘণ্টা আগে