Ajker Patrika

‘আমাকে বাঁচান, বাঁচার যে খুব ইচ্ছা’, ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ায় রোগীর আর্তনাদ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩: ৩৯
‘আমাকে বাঁচান, বাঁচার যে খুব ইচ্ছা’, ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ায় রোগীর আর্তনাদ 

শারীরিক প্রতিবন্ধী। হাঁটতে না পারলেও কথা বলতে পারেন মো. আকবর আলী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন তিনি। বলছিলেন, ‘আমাকে বাঁচান, বাঁচার যে খুব ইচ্ছা! কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারলে তো মারাই যাব।’ 

চমেক হাসপাতালে চালু থাকা কিডনি ডায়ালাইসিস সেবার ফি ৫১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৩৫ টাকা করা হয়েছে। ফি কমানোর দাবিতে অনেকের সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আকবর আলীও যোগ দেন। জন্ম থেকে এই শারীরিক প্রতিবন্ধী বেশ কয়েক বছর ধরে কিডনির ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন। এত দিন আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে অনেক কষ্টে চিকিৎসার ব্যয় মেটাচ্ছিলেন। এখন চিকিৎসার ব্যয় বাড়ায়, মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে তাঁর। 

বাঁচার স্বপ্নও ক্ষীণ হয়ে আসছে তাঁর। কারণ, প্রতি মাসে তাঁর ১২ বার ডায়ালাইসিস দিতে হয়। খরচ পড়ে প্রায় ৬ হাজার। এখন আরও টাকা বাড়ালে চিকিৎসা খরচ চালাতে পারবেন না বলে জানান তিনি। 

আকবর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেই হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ থেকে প্রতি সপ্তাহে তিনবার চমেকে আসতে হয়। একবার ডায়ালাইসিস করাতে ৫০০ টাকার বেশি লাগে। ভাইয়ের বাসায় থাকি। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে চিকিৎসার ব্যয় মেটাই। এখন ব্যয় আরও বাড়লে, চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কাছে আবেদন আমাদের বাঁচান।’ 

আজ রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শত শত কিডনি রোগী। তাঁদের দাবি, টাকা না বাড়িয়ে আরও কমানো দরকার। কারণ, এখানে যাঁরা ডায়ালাইসিস করান, তাঁরা সবাই আর্থিকভাবে অসচ্ছল। 

সুজন নামে এক কিডনি রোগী বলেন, ‘মাসে ৬ হাজার টাকা শুধু ডায়ালাইসিস পেছনে খরচ করতে হয়। এর বাইরে পরিবার সামলানো অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে চিকিৎসা খরচ বাড়ালে একসঙ্গে এক পরিবারের মৃত্যু হবে।’ 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর ডায়ালাইসিসের প্রতি সেশনে সরকারি ফি ছিল ৫১০ টাকা এবং বেসরকারিভাবে প্রতি সেশনে ফি ছিল ২ হাজার ৭৯০ টাকা। এ ছাড়া চমেকে সারা বছর মুক্তিযোদ্ধা ও দরিদ্র রোগীরা ৬৫০ সেশন ফ্রিতে সেবা পেয়ে থাকেন। কিন্তু নতুন বছরে ফি বাড়ানোর পরে হয়েছে ৫৩৫ টাকা, আর বেসরকারি ফি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩০ টাকায়। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে স্যান্ডর কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছর তারা ৫ শতাংশ হারে ফি বাড়াচ্ছে। এ বছরও বেড়েছে। আমরা তো চুক্তির বাইরে যেতে পারছি না। তার ওপর সেশনও নির্ধারিত। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মেশিন কেনার কথা জানিয়েছে। সেটা বাস্তবায়ন হলে কিডনি রোগীরা কম টাকায় সেবা পাবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত